বান্দরবানে কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত ৯০০ বসতঘর

বান্দরবানে কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত ৯০০ বসতঘর

বান্দরবানে কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত ৯০০ বসতঘর
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

বান্দরবানের লামায় আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়। বৃহস্পতিবার (২ মে) মধ্য রাতে লামা উপজেলার পৌরসভাসহ ৫টি ইউনিয়নে কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ৯শ’র বেশি বসতঘর। উপড়ে পড়েছে- ভেঙে গেছে প্রায় ২০টির বেশি বিদ্যুতের খুটি। এছাড়া ফসলি জমি ও ফলের বাগান ক্ষতিগ্রস্ত অনেক কৃষকের। লামা শহরে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল হলেও কালবৈশাখী ঝড়ের দুই দিন পরেও আলিকদম উপজেলায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়নি, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অধিকাংশ খোলা ছাদের নিছে বসবাস করছেন।

লামা বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী মো সাজ্জাদ সিদ্দিক জানান, ১ মে ভোরে ঘুর্ণিঝড়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১১কেভি সঞ্চালনের ১৭টি খুটি ও ৩৩কেভি সঞ্চালনের ১টি খুটি ভেঙে যাওয়াতে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। শুক্রবার মেইন লাইন চালু করে লামা হাসপাতাল ও শহর এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে লাইনঝিড়ি হতে ছাগলখাইয়া, লামা আলিকদম সঞ্চালনের ১১ কেভি লাইনটি প্রায় দেড় কিলোমিটার বিদ্যুৎতের তার ছিড়ে যাওয়াতে আলিকদম সংযোগ স্থাপন করা যায়নি। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী একযোগে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন বিদ্যুৎতের লাইন স্বাভাবিক করতে। দুয়েকদিনের মধ্য লামা ও আলিকদমের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

লামা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, গজালিয়া ইউনিয়ন ও সরই ইউনিয়ন ব্যতীত লামা পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নে ৮শত ১৫টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রাস্তাঘাটে গাছপালা ভেঙে পড়েছিল সেগুলো পৌরমেয়রের নেতৃত্বে, রেডক্রিসেন্টের সদস্য,স্থানীয়দের নিয়ে ভেঙে পড়া গাছ-পালা কেটে পরিস্কার করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে আজ (শুক্রবার) দশ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। গোডাউনে কিছু ঢেউটিন ছিল সেগুলো ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া সর্বমোট ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ৫ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

লামা পৌর মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম (আবছার জানান, গত বুধবার রাতে ঘুর্ণিঝড়ে লামা উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পৌর এলাকায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে। শুধু পৌর এলাকায় একশ বিশটি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও তিনশটি ঘর আংশিক ক্ষতি হয়েছে। পৌরএলাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আড়াই থেকে তিনকোটি টাকা হবে। ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার জন্য ত্রাণ ও পূর্ণবাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাৎক্ষনিক চাউল ও আর্থিক বরাদ্ধ পাওয়া গেছে, তার সাথে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকেও বরাদ্ধ পাওয়া গেছে, সেগুলো সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে বিতরন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হোসেন চৌধুরী জানান, লামা পৌরসভা,সাতটি ইউনিয়নে গত বুধবার রাতে ঘুর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়কক্ষতি হয়েছে। ছয়শত থেকে সাতশত ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং আংশিক ক্ষতি হয়েছে। বান্দরবান জেলাপ্রশাসক হতে পর্যাপ্ত পরিমানে ত্রাণ বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রকে সাথে নিয়ে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ক্ষতিগস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। সর্বমোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ সময় একটু সাপেক্ষ বলে জানান তিনি।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।