পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস: সারাবছর নিষ্ক্রিয় থাকলেও বর্ষা এলে টনক নড়ে প্রশাসনের
নিউজ ডেস্ক
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রাঙামাটিতে কয়েকদিন ধরে মাঝারি ও ভারী বর্ষণ হচ্ছে। যাতে পাহাড়ধসের শঙ্কা রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসেরও আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং ও সচেতনতার প্রচার করেই দায় সারছে প্রশাসন।
জেলায় পাহাড়ধসে ২০১৭ সালে ১২০ ও ২০১৮ সালে ১১ জনের মৃত্যু হয়। এত মৃত্যু পরও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসতি বেড়েছে কয়েক গুণ। নাগরিক সমাজের দাবি, প্রশাসনের নজরদারির অভাবে পাহাড়ের পাদদেশে বসতি বেড়েছে এবং এসব বসতি বন্ধে তেমন কোনও উদ্যোগও চোখে পড়েনি।
রাঙামাটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের তথ্যমতে, রবিবার (৩০ জুন) সকাল থেকে সোমবার (১ জুলাই) সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। রাঙামাটি শহরে ২৩টিসহ জেলায় মোট ২৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
রবিবার রাতে শহরের রূপনগর, শিমুলতলী, লোকনাথ মন্দিরসংলগ্ন পাহাড়ের ঢালসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সচেতনতা তৈরিতে প্রচার-প্রচারণা করা হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবাইয়া বিনতে কাশেম এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিবশঙ্কর বসাকের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একটি বিশেষ টিম শহরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সচেতনতামূলক এ প্রচারণা চালায়।
এ সময় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভারী বর্ষণ শুরু হলে নিরাপদ আশ্রয় অথবা নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে। মাইকিং করা হলেও স্থানীয়রা এখন পর্যন্ত কোনও আশ্রয়কেন্দ্রে যাননি।
শিমুলতলী এলাকার বাসিন্দা মো. হাবিব বলেন, ‘আমার বাসাটি নিরাপদ আছে। যারা পাহাড়ের ঢালে বসবাস করে তাদের জন্য ঝুঁকি আছে। তবে আমাদের এলাকার পাশে যে আশ্রয়কেন্দ্র আছে সেটি এখনও খোলেনি। আর কাউকে যেতেও দেখিনি।’
আরেক বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘রবিবার সারা দিন ও রাতে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। তবে আমরা আমাদের বাড়িতেই ছিলাম। কোনও সমস্যা হয়নি। এই বৃষ্টিতে কিছু হবে না।’ তিনিও অভিযোগ করেন, এখনও আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়নি।
রূপনগর, শিপুলতলী ও নতুনপাড়ার গ্রামপ্রধান মো. মিঠু বলেন, আমাদের এলাকার জন্য বিএম কলেজ ও বেতারকে আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যারা যাবে তাদের জন্য সব করার কথা প্রশাসন থেকে আমাদের জানানো হয়েছে।’
রাঙামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রিফাত আসমা জানান, পৌর এলাকায় ২৩টি ও ৬টি ইউনিয়নে ৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পৌর এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারী তালিকা অনুযায়ী ১ হাজার ৩৬৪ জন রয়েছেন।