নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে পাহাড়ে বাঁশ কোড়ল বিক্রির হিড়িক, হুঁমকিতে বন ও হাতি
![]()
নিউজ স্কে
বর্ষা মৌসুমে (জুন-আগস্ট) বাঁশের বংশ বিস্তারের উপযুক্ত সময়। এ সময় কোন কোন প্রজাতির বাঁশ রাইজোমের মাধ্যমে আবার কোন কোন বাঁশ বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে থাকে। প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো এসব বাঁশই তিন বছর পর পরিপূর্ণ বাঁশে পরিণত হয়ে কর্তন ও ব্যবহার উপযোগী হয়।
তাই বাঁশ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের জন্য মাহবুব উদ্দিন চৌধুরী কর্তৃক প্রণীত কার্যকরী পরিকল্পনার ২২৩ নং অনুচ্ছেদের ১১ উপ-অনুচ্ছেদ এর ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী, প্রতি বছর ১ জুন হতে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাঁশ আহরণ নিষিদ্ধের নির্দেশনা রয়েছে।
কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে একটি মহল বন এলাকায় দাদন খাটিয়ে বাঁশ কোড়ল কাটার হিড়িক চালাচ্ছে।
দেখা গেছে, কচি বাঁশের ডিক অথবা বাঁশের কোঁড়ল মানুষের খাওয়ার প্রবণতা থাকায়, এটি এখন বিভিন্ন এলাকার বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও কাপ্তাই উপজেলা সদর, মিশন ঘাট এলাকায় প্রকাশ্যে বাঁশ কোড়ল বিক্রি হচ্ছে। এতে বনসম্পদ এ বাঁশ কোড়লকে পরিপূর্ণ বাঁশে পরিণত হতে দিচ্ছে না একশ্রেণির অসাধুচক্র।

ফলে পাহাড়ে বাঁশঝাড় বিলুপ্ত হতে বসেছে। এর কারণে বন্য হাতির খাওয়ারও সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি সরকার হচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব।
জুন থেকে আগস্ট- এই তিন মাস বাঁশ প্রজননের প্রধান সময়। এই মৌসুমে এক একটি বাঁশগুচ্ছে ১০ থেকে ৮০টি বাঁশ গাছ একত্রে দেখা যায়। এসব গুচ্ছকে বাঁশঝাড় বলা হয়। ঘর-বাড়ি নির্মাণ ও কাগজ উৎপাদন থেকে শুরু করে বিভিন্ন আসবাবপত্র, কুটির শিল্প তৈরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাঁশের অবদান অনস্বীকার্য। এ বাঁশকে গরিবের গজারি বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। কিন্তু স্থানীয় বন বিভাগের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না থাকায় দিন দিন বেড়েই চলছে বাঁশ কোড়ল কেটে বাঁশ নিধন তৎপরতা। এর ফলে বাঁশঝাড় উজাড়, বাঁশের বংশ ধ্বংস ও বন্য হাতির খাদ্য সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাইকারি বিক্রেতারা জানান, বাঁশ কোড়ল বিক্রি করে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা আয় হচ্ছে। এই টাকায় তাদের সংসারের খরচ চলে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ রাঙ্গামাটি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহিদুর রহমান মিয়া বলেন, জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাঁশের প্রজনন মৌসুম। এ সময় বাঁশ কর্তন বন্ধ ও আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে। বন বিভাগ এ সময় কাউকে বাঁশ কোড়ল আহরণ করতে দেয় না। অবৈধভাবে যদি কেউ বিক্রি করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।