পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সহিংসতা প্রসঙ্গে বস্ত্র ও পাট এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘পাহাড়ে অনেকে ইন্ধন দিচ্ছে। সেই ইন্ধন আঞ্চলিকভাবে প্রতিহত করতে হবে। সেখানে মিলেমিশে থাকাটা প্রয়োজন। এটি শুধু সরকারের নয়, সমাজেরও দায়িত্ব। পাহাড়ে অনেক রক্তপাত হয়েছে, এ রক্তপাত বন্ধ করা প্রয়োজন। আর ১৪ কমিউনিটির মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখতে না পারলে সবারই ক্ষতি হবে।’
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল মেরিন একাডেমিতে যাত্রাবিরতির সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
পাহাড়ি অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে এ সময় উপদেষ্টা বলেন, ‘পাহাড়ে বাঙালি-অবাঙালিসহ ১৪টি কমিউনিটি বাস করছে। তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় রাখতে পাহাড়িদের দুঃখ-বেদনা কষ্টটা বুঝতে হবে। আঞ্চলিকভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ গড়ে না উঠলে এ সমস্যা থেকেই যাবে।’
বিগত সরকারের দুর্নীতির কথা তুলে ধরে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি যে দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি সেখানে “সাগর চুরি” নয়, “মহাসাগর চুরি” হয়েছে। শেষ ১৫ বছর যে সরকার দায়িত্বে ছিল, তারা পুরো সিস্টেমকে দুর্নীতিতে পরিণত করেছে। দুটি মন্ত্রণালয়ের এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে দুর্নীতি নেই। পাট মন্ত্রণালয়কে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমি চেষ্টা করছি, মন্ত্রণালয়টিকে দাঁড় করাতে। ১৫ বছরের দুর্নীতি এক-দুই বছরে সমাধান সম্ভব নয়। এখান থেকে বের হতে সময়ের প্রয়োজন।
‘বিগত সরকারের আমলে একজনের হাজার কোটি টাকা, একজনের ৩৬০টি বাড়ি। দুদিন আগে কী ছিল? এখন তারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে দুর্নীতি দূর করা।’
তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক মার্কেটগুলোতে পাট ব্যবহার বৃদ্ধিতে কাজ করছি। যাতে পাট উৎপাদনে চাষিরা উৎসাহিত হন। সরকারি পাটকল একটিও চলছে না। এগুলো দিয়ে সরকারের পক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব নয়।’
মেরিন একাডেমির শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘মেরিন একাডেমি থেকে যারা বের হচ্ছেন তাদের জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাকরির কোটা বৃদ্ধিতে যা যা প্রয়োজন তা করা হচ্ছে। দুবাই ও সিঙ্গাপুরে পদ বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।’
এ সময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে ছিলেন বরিশাল সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল আব্দুল কাইউম মোল্লা, ডিআইজি মঞ্জুর মোর্শেদ আলম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন এবং বরিশাল মেরিন একাডেমির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন আতিকুর রহমানসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা।
দুপুরে পায়রা বন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা হন উপদেষ্টা।
এর আগে তিনি মেরিন একাডেমির শিক্ষার্থীদের প্যারেড পরিদর্শন করেন এবং একাডেমিক ভবনের সামনে গাছের চারা রোপণ শেষে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন।