মণিপুরে ‘জাস্টিস ফর ইন্ডিজেনাস পিপল’ স্লোগান

নিউজ ডেস্ক
মণিপুরজুড়ে কারফিউ। কিন্তু তার পরও আন্দোলনকারীদের থামানোর উপায় নেই। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাস্টিস ফর ইন্ডিজেনাস পিপল (সংখ্যালঘু জাতিসত্তাদের ন্যায়বিচার) স্লোগানে প্রতিবাদ মিছিল করেছে মণিপুরের বাসিন্দারা।
মিছিলের প্রায় সবার পরনে ছিল কালো পোশাক। কারও কারও মুখে প্রতিবাদের চিহ্নÑ কালো কাপড়ের মাস্ক। কালো রঙের প্রতীকী কফিনও ছিল কয়েকজনের কাঁধে। আর সেই সঙ্গে স্লোগানÑ ‘জাস্টিস ফর ইন্ডিজেনাস পিপল’ (মূল বাসীদের ন্যায়বিচার)! হিংসাবিধ্বস্ত মণিপুরেও এ ‘জাস্টিস’ স্লোগান। এই মিছিলের আয়োজনে ছিল ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অব মণিপুর (এটিএসইউএম)’, আইটিএলএফসহ কুকি-জো জনজাতিদের আরও কয়েকটি সংগঠন।
আড়াই দশক আগে দিল্লিতে মডেল জেসিকা লালের খুনের মামলা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে ভারতজুড়ে উঠেছিল ‘জাস্টিস ফর জেসিকা’ স্লোগান। বামদলের ক্ষমতার কালে তিলজলার যুবক রিজওয়ানুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনা, জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়ায় নাবালিকা আসিফাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরও শোনা গিয়েছিল সেই স্লোগান। হালফিলে আরজি কর-কাণ্ডের পরও একই স্লোগান শুনেছে বাংলা তথা গোটা দেশ। এবার উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রথমবার শোনা গেল সেই ‘জাস্টিসের’ দাবি।
দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে জাতিহিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে মণিপুরে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে পাহাড়ি এলাকার মিশ্র জনবসতি সম্পন্ন জেলা চূরাচাঁদপুর। সেখানেই সোমবার দেখা গেছে জাস্টিসের দাবিতে কুকিদের এই মিছিল। গোষ্ঠী হিংসায় নিহত পরিজনদের স্মরণে নকল কফিন ছিল সেই মিছিলে। যদিও কুকি-জো জনজাতিরা মণিপুরের মূল নিবাসী কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আদতে মিয়ানমার ও মিজোরাম থেকে মণিপুরের পাহাড়ে তাদের আগমন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৩ মে জনজাতি ছাত্রদের কর্মসূচিকে ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরই জনজাতি সংগঠনগুলো তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত দুইশোর বেশি সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীতে মণিপুর ভরে আছে ও আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ারস অ্যাক্ট, ১৯৫৮ চালু রয়েছে। তার পরও মেইতেই, কুকি সমাজ ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ক্রমাগত চরম হিংসা চলছে। পাঁচ মাস হতে চলল রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার আগের অবস্থান নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মহিলা বিল নিয়ে এক দিনে তিনবার লম্বা লম্বা ভাষণ দিলেও মণিপুর নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেননি।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।