পীরের দরবারে হামলার ভিডিওকে হিন্দুদের ওপর হামলা বলে অপপ্রচার
![]()
নিউজ ডেস্ক
গত ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ইসলামপন্থীরা হামলা অব্যাহত রেখেছে —এমন দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচারিত হয়েছে। ভিডিওটিতে দুটি ভিন্ন ফুটেজ দেখানো হয়েছে।
প্রথম ফুটেজে দেখা যায়, ইসলামপন্থীরা একটি মাজারে আক্রমণ চালাচ্ছে, যেটিকে তারা ধর্মবিরোধী হিসেবে বিবেচনা করছে। দ্বিতীয় ফুটেজে একজন ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায় যে মসজিদের ভেতর থাকা কোরআন শরীফ পুড়ে গেছে।
এই ভিডিওটি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ শেয়ার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দাবির ভিডিওটি দেখতে পারবেন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি হিন্দুদের ওপর হামলার কোনো ঘটনার নয় বরং, শেরপুরের খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার ওরফে দোজা পীরের দরবারে (মুর্শিদপুর পীরের দরবার) হামলার ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
প্রথম ফুটেজ যাচাই: অনুসন্ধানে ভিডিওটি থেকে কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে গত ২৮ নভেম্বর এইচ এস রিপন নামের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।
ভিডিওটির ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, ‘জ্বলছে শেরপুর মুর্শিদ পীড়ের দরবার শরীফে হামলা আগুন ও লুটপাট।’ অর্থাৎ, এটি শেরপুরে মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলার ঘটনা।
দ্বিতীয় ফুটজে যাচাই: অনুসন্ধানে গত ২৮ নভেম্বর চৌধুরী তানভীর নামের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাথে সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।
ভিডিওটির ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, ‘শেরপুরের মুর্শিদপুর দরবারে মসজিদে হামলা ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করেছে তথাকথিত ধার্মিক মুসলমানরা। এদের বিরুদ্ধে অনেকের ঈমানী জোস দেখছি না এর কারন কি? কিন্তু আমাদের পবিত্র ধর্মে তো হামলাকারীর ধর্মীয় পরিচয় উপর ভিত্তি করে আল্লাহ এর ঘরে হামলার অনুমতি দেওয়া হয় নি’। অর্থাৎ, এটিও শেরপুরে মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলার ঘটনার।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, শেরপুরের খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার ওরফে দোজা পীরের দরবারে (মুর্শিদপুর পীর) হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যুর জেরে আবারও হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গত ২৮ নভেম্বর দুপুরে সদর উপজেলার লছমনপুর এলাকায় দরবারে হামলা করে ‘বিক্ষুব্ধ জনতা’।
এর আগে ২৬ নভেম্বর মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও ঢাকা পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৯ নভেম্বর সকাল থেকে পীরের দরবারের বিশাল জায়গাজুড়ে থাকা গাছপালা কেটে নেওয়াসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র গাড়িতে লুট করা শুরু করে দুর্বৃত্তরা। পরে দরবারের কিছু মুরিদ ও খাদেম দরবারে প্রবেশ করে দুটি ট্রাকসহ অন্তত ১০টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
সুতরাং, শেরপুরে পীরের দরবারে হামলার ঘটনাকে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।