হাটহাজারী-নাজিরহাট-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন
![]()
নিউজ ডেস্ক
চট্টগ্রামের হাটহাজারী-নাজিরহাট-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের ৩২ কিলোমিটার অংশে ১৮ ফুট প্রস্থের সড়ককে ৩৪ ফুট প্রস্থে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করেছেন সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। রবিবার (৬ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় হাটহাজারী বাসস্টেশন (জিরো পয়েন্টে) তিনি প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন।
এ সময় আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ২ বছর মেয়াদের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও দেড় বছরের মধ্যে সড়কটির সম্প্রসারণ কাজ সম্পন্ন হবে।
সড়ক ও জনপথ সূত্রে জানা গেছে, ইস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (ইবিবিআইপি)-এর আওতায় সড়কটির উন্নয়ন কাজ শুরু হবে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ও র্যাব আর সি এ উন্নয়ন কাজ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করবে। প্রকল্পের অধীনে বর্তমানে বিদ্যমান ১৮ ফুট প্রস্থের সড়কটি সম্প্রসারণ করে ৩৪ ফুটে উন্নীত করা হবে। হাটহাজারী বাসস্টেশন জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে নাজিরহাট-ফটিকছড়ির হেয়াকো-মানিকছড়ি-মাটিরাঙা-খাগড়াছড়ি পর্যন্ত ৩২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সড়কটি তিন লেনে উন্নীত করা হবে। এ সড়কে নির্মাণ করা হবে ৩০৮ মিটারের ৩৮টি আরসিসি কালভার্ট। মোট ৪টি প্যাকেজে সম্পন্ন হওয়া কাজের মধ্যে প্যাকেজ-১ এর আওতায় হাটহাজারী থেকে সরকারহাট বাজার পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ও ৯টি কালভার্টের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৯১.৮৭ কোটি টাকা। প্যাকেজ-২ এর আওতায় সরকারহাট থেকে নাজিরহাট পর্যন্ত ৮ কি. মি সড়ক ও ১৩টি কালভার্টের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৭.৯৩ কোটি টাকা। প্যাকেজ-৩ এর আওতায় নাজিরহাট-বিবিরহাট পর্যন্ত ৮ কি. মি সড়ক ও ১১টি কালভার্টের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৭.৩৬ কোটি টাকা। প্যাকেজ-৪ এর আওতায় বিবিরহাট-আর্মি ক্যাম্প চেকপোস্ট ধলই চা বাগান পর্যন্ত ৮.৫ কি.মি সড়ক ও ৫টি কালভার্টের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৩.৩১ কোটি টাকা। সড়ক-বাঁধ প্রশস্ত করতে ব্যবহার হবে ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৫০৫ দশমিক ৬ ঘনমিটার মাটি। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় মহাসড়কটিতে রোড সাইন-সিগন্যাল, গাইড পোস্ট, রোড মার্কিংসহ সড়ক নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সড়ক সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) রুহুল আমিন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইউনুছ গণি চৌধুরী, চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ও ২ নং ধলই ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর জামান সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উত্তর চট্টগ্রামের মানুষের যাতায়তের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে। তাছাড়া চট্টগ্রামের সঙ্গে ফটিকছড়ি, খাগড়াছড়ির যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আসবে। চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে যানজট হলে বিকল্প সড়ক হিসেবে হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি হয়ে ঢাকা এবং একইভাবে কম সময়ের মধ্যে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি-ফটিকছড়ি-হাটহাজারী হয়ে চট্টগ্রাম যাতায়াত করা সম্ভব হবে। আন্তঃজেলার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। একই সঙ্গে কৃষিভিত্তিক পণ্য পরিবহনও সহজতর হবে।