বান্দরবানে বম সম্প্রদায়ের পাশে সেনাবাহিনী, শিক্ষা ও খাদ্য সহায়তায় নতুন দিগন্ত

বান্দরবানে বম সম্প্রদায়ের পাশে সেনাবাহিনী, শিক্ষা ও খাদ্য সহায়তায় নতুন দিগন্ত

বান্দরবানে বম সম্প্রদায়ের পাশে সেনাবাহিনী, শিক্ষা ও খাদ্য সহায়তায় নতুন দিগন্ত
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জনবৈচিত্র্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা, যা পর্যটন শিল্প ও প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য খ্যাত। এই অঞ্চলের শান্তি, উন্নয়ন ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

বিশেষত, বম সম্প্রদায়ের উন্নয়ন এবং সহায়তায় সেনাবাহিনীর দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপগুলো নতুন দিগন্তের সূচনা করছে।

বান্দরবানে বম সম্প্রদায়ের পাশে সেনাবাহিনী, শিক্ষা ও খাদ্য সহায়তায় নতুন দিগন্ত

আজ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ ২০২৫) সেনাবাহিনীর ১৬ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট এর অধীনে রুমা ও থানচি উপজেলার বাকলাইপাড়া সাবজোনে সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধিনায়ক, দি ম্যাজিস্ট্রেট টাইগারস্ লেঃ কর্নেল জুলকার নাঈন।

মতবিনিময় সভায় সেনাবাহিনী বম জনগণের শিক্ষা, খাদ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও উন্নয়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে।

বান্দরবানে বম সম্প্রদায়ের পাশে সেনাবাহিনী, শিক্ষা ও খাদ্য সহায়তায় নতুন দিগন্ত

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার সম্প্রসারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরো বলেন, পাড়া এবং স্থানীয় জনগণের জীবন যাত্রার মান এবং সার্বিক উন্নয়নের জন্য শিক্ষার কোন বিকল্প নেই, পাড়ার সন্তান এবং যুবসমাজ এর মান সম্মত শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য সকল প্রকার প্রয়োজনে ১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট পাশে থাকবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। পাড়ার যে সকল সদস্য পাড়া ছেড়ে চলে গিয়েছেন তাদের নিজ ঘরে ফিরে এসে নির্ভয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য সকল প্রকার সহায়তা সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রদান করা হবে। এছাড়াও তিনি যুব সমাজ এর বিকাশ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সন্ত্রাসবাদ নিরসনে বম জনগোষ্ঠীদের ভুমিকা, এলাকায় চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে পদক্ষেপ, পর্যটকদের আগমন এবং টুরিস্ট গাইড হিসাবে ব্যবহার, দায়িত্বপূর্ণ এলাকার এনজিও সংস্থা সমূহের কার্যক্রম এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান সহায়তা সম্পর্কে আলোচনা করেন।

বান্দরবানে বম সম্প্রদায়ের পাশে সেনাবাহিনী, শিক্ষা ও খাদ্য সহায়তায় নতুন দিগন্ত

তিনি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও সকল ধরণের রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল জনসংখ্যার আপদকালীন সময় ছাড়াও ধর্মীয় বিভিন্ন কর্মকান্ডে সবসময় সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করে আসছে। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য এলাকার সাধারণ জনগণের মাঝে পাশে থেকে যে কোন প্রয়োজনে সর্বদা নিরলসভাবে কাজ করে যাবে বলে অধিনায়ক আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এদিন, সভায় ৭৭ জন স্থানীয় জনগণের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। প্রতি ব্যক্তিকে ১০ কেজি চাল, ২ কেজি চিনি, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি লবণ এবং ২.৫ লিটার তেল দেওয়া হয়। এছাড়া, বাকলাই পাড়া এলাকায় একটি ওয়াটার রিজার্ভারের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়, যা এলাকার পানি সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে।

পরে অধিনায়ক দি ম্যাজিস্ট্রিক টাইগারস্ কারবারীদের মাঝে সম্মাননা প্রদান করেন।

বান্দরবানে বম সম্প্রদায়ের পাশে সেনাবাহিনী, শিক্ষা ও খাদ্য সহায়তায় নতুন দিগন্ত

বম সম্প্রদায়ের নেতা, কারবারি এবং শিক্ষকরা সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগকে অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন। শিক্ষক জয়রাম বম বলেন, “আমরা নিজ ঘরে ফিরতে পেরে সেনাবাহিনীর প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। দীর্ঘদিন পাড়ায় না থাকায় জুম চাষ সঠিকভাবে হয়নি। এজন্য আমাদের খাদ্য সামগ্রীর সাহায্য দরকার, যা আমরা বর্তমানে বাকলাই পাড়া আর্মি ক্যাম্প থেকে পাচ্ছি। সেনাবাহিনী আমাদের পাশে থাকলে বাকলাই পাড়াকে আগের মত করে গড়ে তুলতে পারব”

এছাড়া, প্রাতাপাড়ার কারবারি পাকত্লিং বম বলেন, “সেনাবাহিনীর সহায়তায় আমাদের পাড়ার অবস্থা বর্তমানে অনেক ভালো। আমাদের অনুরোধ, আমরা সেনাবাহিনীকে সব সময় এভাবে পাশে চাই”

সেনাবাহিনীর এই মানবিক পদক্ষেপ বম সম্প্রদায়ের জন্য শুধু খাদ্য সহায়তার মাধ্যমে নয়, বরং শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং শান্তির প্রসারে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।