বিদ্রোহীদের হামলার মুখে থাইল্যান্ড পালাল মিয়ানমার জান্তা সেনারা

বিদ্রোহীদের হামলার মুখে থাইল্যান্ড পালাল মিয়ানমার জান্তা সেনারা

বিদ্রোহীদের হামলার মুখে থাইল্যান্ড পালাল মিয়ানমার জান্তা সেনারা
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর প্রবল আক্রমণে সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে পালিয়েছে একদল জান্তা সেনা। থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা হয়েছে।

থাই সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার (১৪ মার্চ) ভোররাতে সীমান্তবর্তী পুলু তু সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ করে কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (কেএনএলএ) যোদ্ধারা। মিয়ানমার সেনাবাহিনী ঘাঁটিটি রক্ষা করার চেষ্টা করে কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেএনএলএ ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়।

থাই সেনাবাহিনীর এক বিবৃতি অনুযায়ী, বিদ্রোহীদের হামলায় বেশ কয়েকজন মিয়ানমার সেনা নিহত হয়েছে এবং কিছু সেনা সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডের তাক প্রদেশে পালিয়ে এসেছে।’ তবে ঠিক কতজন সেনা প্রবেশ করেছে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। শুধুমাত্র বলা হয়েছে, তাদের ‘মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে’।

কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির রাজনৈতিক শাখা কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের একজন মুখপাত্রের মতে, কেএনএলএ যোদ্ধারা ভোর ৩টার দিকে ঘাঁটিটি দখল করে। তিনি আরও জানান, মিয়ানমারের সেনারা ‘তাদের বন্দুক ফেলে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যাওয়ার’ পর কেএনএলএ যোদ্ধারা ঘাঁটিটি দখলে নেয়।

পুলু তু সামরিক ঘাঁটিটি সীমান্তবর্তী শহর মায়াওয়াদ্দী থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র যা গত বছর গণতন্ত্রপন্থি প্রতিরোধ যোদ্ধা ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়।

অঞ্চলটি মিয়ানমারের জালিয়াত চক্রের উত্থানের কেন্দ্রবিন্দুও, যেখানে শত শত স্ক্যাম সেন্টারে হাজার হাজার বিদেশি নাগরিক ইন্টারনেটে প্রেম বা বিনিয়োগ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতারণা করে থাকে।

চীন ও থাইল্যান্ড সরকারের চাপে সম্প্রতি অপরাধী চক্রের দখলে থাকা এসব স্ক্যাম সেন্টার তথা জালিয়াত কেন্দ্রে অভিযান চালায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। ওই অভিযানে ২৮টি দেশের সাত হাজারেরও বেশি নাগরিককে আটক করে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড ফোর্স।

উদ্ধার হওয়া ৭ হাজার জনের মধ্যে ৪ হাজার ৮৬০ জন চীনা নাগরিক, ৫৭২ ভিয়েতনামের ও ৫২৬ জন ভারতীয়। এছাড়া পাঁচশ’র বেশি আফ্রিকান নাগরিকও ছিল। তাদেরকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

২০২১ সালে সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমার গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জান্তা বিভিন্ন সশস্ত্র জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং গণতন্ত্রপন্থিদের সাথে লড়াই করছে।

কেএনএলএ কয়েক দশক ধরে মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে বসবাসকারী কারেন জনগণের জন্য বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে আসছে। এটি সক্রিয় কয়েক ডজন জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে একটি, যারা জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে সবচেয়ে কার্যকর বাহিনী হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে।

এই লড়াইয়ে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী যদিও উল্লেখযোগ্য আঞ্চলিক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বাহিনী মিয়ানমারের প্রাণকেন্দ্রে বেশ শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। তাদের একটি বিমান বাহিনী রয়েছে যা প্রতিপক্ষের ওপর কার্যকর হামলা ও তাৎপর্যপূর্ণ ক্ষতি করতে সক্ষম।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।