বাঘাইছড়িতে চাঁদা না দেওয়ায় বাঙ্গালি চালককে মারধর, গাড়ি ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগের হুমকি

আহত চালক জিন্নাত আলী।
নিউজ ডেস্ক
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা-দিঘীনালা সড়কের ১১ কিলো নামক জুম্মবি আদাম এলাকায় ফের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের নগ্ন রূপ দেখিয়েছে ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ)। চাঁদা না দেওয়ায় এক বাঙ্গালি গাড়িচালককে নির্মমভাবে মারধর করে তার গাড়ি ভাঙচুর করেছে সন্ত্রাসীরা। পরে আগুন লাগিয়ে গাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
আহত চালকের নাম মোঃ জিন্নাত আলী (৩২), পিতা মোঃ মাইন উদ্দিন, গ্রাম: পশ্চিম মুসলিম ব্লক, বাঘাইছড়ি। তিনি বর্তমানে বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে চট্টমেট্রো-ল-১১-৯০৭৮ নম্বরের জিপ (পিকআপ) গাড়িটি নিয়ে জিন্নাত আলী বাঘাইছড়ি থেকে রাঙামাটির উদ্দেশ্যে যাত্রী পরিবহন করেন। ফেরার পথে সন্ধ্যায় গাড়িটি ১১ কিলো এলাকায় পৌঁছালে ইউপিডিএফ (প্রসীত পন্থি) সন্ত্রাসীরা গাড়ির গতি রোধ করে। যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে চারটি চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয় তারা, পরে চালককে গাড়ি থেকে নামিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে এবং গাড়ির চাবি নিয়ে নেয়।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার সময় সুবল চাকমা ও সোহেল চাকমার নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র দল এই হামলা চালায়। মারধরের সময় সন্ত্রাসীরা হুমকি দেয়, এ ঘটনা জানাজানি হলে গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হবে। সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় জনগণ রাস্তায় নেমে আসে এবং যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। তারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার, আহত চালকের সুষ্ঠু চিকিৎসা এবং গাড়ি উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সচেতন মহল বলছে, এটি পাহাড়ে বসবাসকারী অধিকারহারা বাঙ্গালি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংগঠিত একটি পরিকল্পিত হামলা। তারা অভিযোগ করেছেন, বারবার এমন হামলার শিকার হলেও প্রশাসনের নিরবতা প্রশ্নবিদ্ধ।
উল্লেখ্য, ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) দীর্ঘদিন ধরেই চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে। তাদের হাতে শুধু বাঙালিরাই নয়, পাহাড়ি নিরীহ মানুষরাও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
এদিকে বাঘাইছড়ি এলাকায় ইউপিডিএফ ও জেএসএস-এর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়ছে। ২৫ এপ্রিল থেকে বেশ কিছু বাজারে বয়কট চাপিয়ে দিয়েছে আঞ্চলিক দলগুলো। চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।