ভারতে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটককৃতদের পাঠানো হলো ত্রিপুরায়, বাড়ছে পুশ-ব্যাক আশঙ্কা

ভারতে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটককৃতদের পাঠানো হলো ত্রিপুরায়, বাড়ছে পুশ-ব্যাক আশঙ্কা

ভারতে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটককৃতদের পাঠানো হলো ত্রিপুরায়, বাড়ছে পুশ-ব্যাক আশঙ্কা
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার পর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হওয়া ‘অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিতকরণ অভিযানে’ এবার বড় পরিসরে শুরু হয়েছে কথিত ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ শনাক্ত ও আটক প্রক্রিয়া। রাজস্থান, গুজরাট, ত্রিপুরা থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম পর্যন্ত এই তল্লাশি অভিযানের আওতায় আটক হয়েছেন বহু বাংলাভাষী মুসলমান—যাদের মধ্যে প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক থাকার অভিযোগও উঠেছে।

রাজস্থানে অভিযান চালিয়ে প্রথম দফায় ১৪৮ জনকে ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করে বুধবার বিশেষ বিমানে করে ত্রিপুরার আগরতলায় পাঠানো হয়েছে। জোধপুর বিমানবন্দর থেকে সন্ধ্যা সাতটার দিকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাদের আগরতলায় পৌঁছে দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছে আগরতলা বিমানবন্দর সূত্র।

ধারণা করা হচ্ছে, এসব ব্যক্তিকে খুব শিগগিরই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ-ব্যাক (জবরদস্তি ফেরত পাঠানো) করা হতে পারে। এর আগে গত সপ্তাহেই ত্রিপুরার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, শান্তিপুর ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ৭২ জনকে অনুপ্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয় বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। একইভাবে সপ্তাহজুড়ে কুড়িগ্রাম, সিলেট ও মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়েও পুশ-ইনের ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে রাজস্থানে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ চিহ্নিত করার নামে ভারতীয় নাগরিকদেরও আটক করার অভিযোগ তুলেছেন সংশ্লিষ্টদের পরিবার ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। পশ্চিমবঙ্গের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ’ জানিয়েছে, গত ক’দিনে তাদের হেল্পলাইন নম্বরে রাজস্থান থেকে অন্তত ২০০টির বেশি অভিযোগ এসেছে—যেখানে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়ের বাংলাভাষী মুসলমানরা অভিযোগ করছেন, পরিচয়পত্র যাচাইয়ের নাম করে পুলিশ তাদের আটক করে রেখেছে।

সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক আসিফ ফারুক জানান, “পশ্চিমবঙ্গের অনেক বাঙালি মুসলমানকে ধরে নিয়ে গিয়ে কোথায় রাখা হয়েছে তা পরিবারের সদস্যরাও জানতে পারছে না। অনেকের মোবাইল ফোনও নিয়ে নেওয়া হয়েছে।”

নদীয়ার বাসিন্দা সফিকুল সেখের পরিবার অভিযোগ করেছে, রাজস্থান পুলিশ তাকে আটকের পর ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিয়েছে। লালকুঠি থানায় যোগাযোগ করলে জানানো হয়, তাকে আমের এলাকার ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।

আটকদের বেশিরভাগকেই ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত থানায় আটকে রাখা হলেও, এদের অনেককেই এখনও আদালতে তোলা হয়নি। এ প্রসঙ্গে আসিফ ফারুক প্রশ্ন তোলেন, “আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে পেশ করাটা আইন অনুযায়ী বাধ্যতামূলক। তাহলে পুলিশ কী করে কাউকে এতদিন আটকে রাখতে পারে?”

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, বাংলাদেশি পুশ-ব্যাকের নামে ভারতে বসবাসকারী সংখ্যালঘু বাংলাভাষীদের হয়রানি ও বেআইনি আটকের ঘটনা উদ্বেগজনক এবং এটি এক ধরনের জাতিগত প্রোফাইলিং ও ধর্মীয় টার্গেটিং-এর শামিল। তারা দ্রুত হস্তক্ষেপের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।