উন্নয়নবিরোধী ষড়যন্ত্রে ইউপিডিএফ: নানিয়ারচর-লংগদু সড়ক নির্মান বন্ধের দাবিতে সন্ত্রাসী সমাবেশের ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার
আগামীকাল সোমবার (২৬মে) রাঙামাটি পার্বত্য জেলার নানিয়ারচর উপজেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ কর্তৃক আহুত সমাবেশকে ঘিরে পাহাড়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
নানিয়ারচর হতে লংগদু পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধের দাবিতে সংগঠনটি বড়পুল পাড়া এলাকায় জোরপূর্বক পাহাড়িদের সমেবত করে সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে। অথচ এই সড়কই দুই উপজেলার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও প্রয়োজন পূরণে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারত।
বলা প্রয়োজন, ২০২৩ অর্থবছরে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটি নানা প্রশাসনিক জটিলতা এবং ইউপিডিএফ এর লাগাতার সন্ত্রাসী তৎপরতায় এখনো সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়নি। বর্তমানে প্রায় ১৪ কিলোমিটার মাটির রাস্তার এলাইনমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার পর সেখানে মাটি ভরাটের কাজ চলমান। পুরো প্রকল্পটি সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্রিগেডের অধীনস্থ ২০ ইসিবি কর্তৃক বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যেই ১০ কিমি এলাকায় পিচ ঢালাই ও হেরিং বোর্নের কাজ শেষ হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সড়কটি নির্মাণ হলে একদিকে যেমন ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষার প্রসার ঘটবে, অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। ফলে ইউপিডিএফ এর দীর্ঘদিনের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী নিয়ন্ত্রণে বড় ধাক্কা লাগবে। এই কারণেই সংগঠনটি মরিয়া হয়ে উঠেছে উন্নয়নপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে। তাদের সাবেক্ষং ইউনিয়নের পরিচালক সুকৃতি চাকমা ইতোমধ্যেই স্থানীয় জনগণকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ২৬ মে’র সমাবেশে অংশগ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীকে জিম্মি করে রেখেছে। তারা স্কুল নির্মাণ থেকে শুরু করে সেতু কিংবা সড়ক – যেকোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ পাহাড়বাসী, যাদের জীবনমান উন্নয়নের স্বপ্ন বারবার ভেঙে দিচ্ছে এই চরমপন্থী গোষ্ঠী।
অন্যদিকে, নানিয়ারচর ও লংগদু উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, এই সড়ক প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সমন্বিত উদ্যোগ আরও জোরদার করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরণের উন্নয়নবিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। পাহাড়ে সন্ত্রাসের ছায়া দূর করতে হলে অবকাঠামোগত উন্নয়ন যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন ইউপিডিএফ সহ সব চরমপন্থী সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যক্রম আইনের আওতায় এনে দমন করা।
একটি সড়ক শুধু রাস্তা নয়, এটি হতে পারে একটি অঞ্চলের মুক্তির সোপান। আর সেই মুক্তির পথকে রুদ্ধ করতে যারা মাঠে নামে, তারা জনগণের নয়, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করে। তাই রাষ্ট্রের উচিত, এইসব অপশক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ও প্রশাসনিকভাবে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনস্বার্থের প্রকল্প বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।