আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ। এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিশ্বব্যাপী সব দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদান। বিশ্বের সংঘাতময় অঞ্চলগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালে জন্ম হয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হবে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল আইএসপিআর জানিয়েছে, সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়/র‌্যালি-২০২৫’ এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। ১১টায় চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানে আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন করা হবে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়াও সকালে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়/র‌্যালি-২০২৫’ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষে বিশেষ জার্নাল ও জাতীয় দৈনিকসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিশেষ টকশো প্রচারিত হবে। শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ইতোমধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আহত শান্তিরক্ষীদের সম্মানে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, তিন বাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, শান্তিরক্ষা মিশনে সুনামের সঙ্গে কাজ করে আসছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ। পেশাদার মনোভাব, অবদান ও আত্মত্যাগের ফলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে নিজের অবস্থানও সুসংহত করেছে বাংলাদেশ। বিশ্বজুড়ে ২০০৩ সাল থেকে প্রতিবছর ২৯ মে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালিত হয়। বিভিন্ন দেশের শান্তিরক্ষীদের মহান আত্মত্যাগকে স্মরণ করে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে দিবসটি। ইউক্রেনের শান্তিরক্ষী সংস্থা এবং ইউক্রেন সরকারের যৌথ প্রস্তাবনায় ২০০২ সালের ১১ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী এ দিবসের রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। ২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস প্রথম উদ্‌যাপন করা হয়। ১৯৪৮ সালে সংঘটিত আরব-ইসরায়েল যুদ্ধকালীন যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে গঠিত জাতিসংঘ ট্রুস সুপারভিশন অর্গানাইজেশন (আন্টসো) দিনটিকে উপজীব্য করে ২৯ মে তারিখটি স্থির করা হয়েছে। জাতিসংঘ ট্রুস সুপারভিশন অর্গানাইজেশনই হচ্ছে প্রথম জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী।

১৯৮৮ সালে সেনাবাহিনীর ১৫ সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল ইরাক-ইরান শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যোগ দেয় বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে জাতিসংঘের পতাকাতলে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ কাজ শুরু করে। এক বছর পর ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ পুলিশ নামিবিয়ায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যোগ দেয়। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী মোজাম্বিক এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনী বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তী কয়েক বছর বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী বেশ সুনাম ও কৃতিত্বের সঙ্গে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করে গেছে। সে সময় অর্থাৎ ১৯৯৩-৯৪ সালে সবচেয়ে আলোচিত রুয়ান্ডা, সোমালিয়া ও বসনিয়া- এ তিনটি শান্তি মিশনে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আলোচনার কেন্দ্রমূলে আসে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের সেনাবাহিনী দক্ষতা এবং সামরিক জ্ঞানে রুয়ান্ডায় বেলজিয়াম, সোমালিয়ায় আমেরিকান ও বসনিয়ায় ফ্রান্স সেনাবাহিনীকে যে টেক্কা দিতে পারে তা জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট দেশের কর্মকর্তাদের চিন্তার বাইরে ছিল। ফলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে তখন থেকেই বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় হতে থাকে। ২০০৯ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় নারীদের অবদান ও ভূমিকার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে। শান্তিরক্ষায় নারীর ভূমিকা ও লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষেই মূলত এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই সর্বপ্রথম ২০১০ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পুলিশের নারী দল পাঠায়।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।