ঘৃণা রুখতে এসে বাংলাদেশে কি ঘৃণাই ছড়াচ্ছে জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউএনডিপি?
![]()
নিউজ ডেস্ক
জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা UNDP-এর সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট একটি গুরুতর নৈতিক ও কূটনৈতিক অপরাধ।
আন্তর্জাতিক ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রতিরোধ দিবসের মতো একটি সম্মানজনক দিবস উপলক্ষে, একটি সংবেদনশীল রাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে UNDP Bangladesh-এর পক্ষ থেকে এমন একটি বিভেদমূলক ও প্ররোচনামূলক চিত্র প্রকাশ করা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। যে চিত্রে “চিং”, “চাং”, “রোহিঙ্গা”, “চাইনিজ”, “BTS”, “জংলি” ইত্যাদি শব্দকে ঘৃণার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে—সেটা কেবল জাতিগত নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিচয়ের উপর সরাসরি আঘাত।
👉 এই চিত্রটি যেন এক ভয়ঙ্কর বার্তা বহন করে—বিশ্বের বহু জাতিসত্তা, গোষ্ঠী বা সংস্কৃতি কীভাবে ঘৃণার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠছে, তা চিত্রিত করতে গিয়ে উল্টো তাদেরকেই “ঘৃণার উৎস” হিসেবে দেখানো হয়েছে। এটা কেবল অবিবেচক নয়, বরং স্পষ্টতই ঘৃণার নতুন এক প্রাতিষ্ঠানিক রূপ।
UNDP কি জানে না—বাংলাদেশে বসবাসরত পার্বত্য অঞ্চলের নাগরিকদের প্রতি ‘চু চা’ ধরনের গালিগালাজ যদি কখনও কেউ করে থাকে, তার পাশাপাশি বহু সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিকেও পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী থেকে “সেটেলার”, “বাঙালি সাম্রাজ্যবাদী”, “বাহিরের লোক” বলে হেয় ও ঘৃণা করা হয়? তাহলে কেন UNDP-এর এই প্রচারণায় একপক্ষীয় ‘ভিক্টিম ফ্রেমিং’ করা হলো? কেন উল্টো পক্ষের সাম্প্রদায়িক বা জাতিগত বিদ্বেষকে এই পোস্টে উপেক্ষা করা হলো?

এই পোস্ট অনিচ্ছাকৃত হলেও স্পষ্টতই একটি জাতিগত পক্ষপাত এবং বিভাজনকে প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থন দেয়, যা জাতীয় সংহতির জন্য হুমকি, এবং দীর্ঘমেয়াদে একটি জাতিগত বিভাজন ও অসহিষ্ণুতার ন্যারেটিভকে লিগিটিমাইজ করে।
⚠️ ভবিষ্যৎ পরিণতি কী হতে পারে?
-
সামাজিক উত্তেজনা: এমন পোস্ট জাতিগত, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিভাজন বাড়িয়ে দিতে পারে। সমাজে নতুন করে ঘৃণা, অপবাদ ও সহিংসতা উসকে দিতে পারে।
-
কূটনৈতিক অস্বস্তি: BTS, জার্মান, রোহিঙ্গা, চাইনিজ—এইসব পরিচয়ের লোকজন বা রাষ্ট্রগুলো এ নিয়ে আপত্তি তুললে আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও টানাপোড়েন দেখা দিতে পারে।
-
জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন: একটি নিরপেক্ষ, মানবিক মূল্যবোধ-নির্ভর সংস্থা হিসেবে UNDP বা জাতিসংঘ যদি এমন পক্ষপাতমূলক বার্তা দেয়, তাহলে এ অঞ্চলে তাদের কার্যক্রম নিয়ে জনগণের আস্থা মারাত্মকভাবে নষ্ট হতে পারে।
✊ দাবি জানাই:
-
UNDP Bangladesh-এর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এই পোস্টের জন্য।
-
ভবিষ্যতে এমন একতরফা, পক্ষপাতদুষ্ট ও জাতিগত সংবেদনশীলতাবিরোধী প্রচারনা বন্ধে একটি স্বচ্ছ নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে।
-
বাংলাদেশ সরকারের উচিত জাতিসংঘের স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এই ঘটনার ব্যাখ্যা দাবি করা এবং স্পষ্ট বার্তা দেওয়া—ঘৃণা রুখতে এসে ঘৃণা ছড়ানো চলবে না।
এটা কেবল একটি কার্টুন নয়, এটা একটি ভিশন—যা ভুল পথে গেলে সমাজে ঘৃণা ও বৈষম্যের বিষবৃক্ষ রোপণ করতে পারে। এখনই সময় দাঁড়ানোর, প্রতিবাদ করার—তাহলেই একদিন ঘৃণাহীন, সহনশীল সমাজ গড়া সম্ভব হবে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।