পাক-ভারত সংঘাতকে ভ্রাম্যমাণ ল্যাব হিসেবে ব্যবহার করেছে চীন

পাক-ভারত সংঘাতকে ভ্রাম্যমাণ ল্যাব হিসেবে ব্যবহার করেছে চীন

পাক-ভারত সংঘাতকে ভ্রাম্যমাণ ল্যাব হিসেবে ব্যবহার করেছে চীন
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

অপারেশন সিন্দুরের সময় ভারতকে আসলে তিনটি প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, যার মধ্যে পাকিস্তান ছিল ‘সম্মুখ প্রতিপক্ষ’ এবং বাকি দুই প্রতিপক্ষ ছিল চীন ও তুরস্ক যারা ভারতের পশ্চিম প্রতিবেশীকে (পাকিস্তানকে) গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) ভারতের উপ-সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং এই দাবি করেন।

ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (FICCI) আয়োজিত ‘নতুন যুগের সামরিক প্রযুক্তি’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় অপারেশন সিন্দুরের ওপর আলোকপাত করে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় লেফটেন্যান্ট জেনারেল সিং পাকিস্তানের মাধ্যমে ভারতের ক্ষতি করার চীনের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করেন। এ জন্য চীনের ‘৩৬টি কৌশলের প্রাচীন সামরিক’ প্রবন্ধটি তুলে ধরেন, যেখানে ‘ধার করা ছুরি’ দিয়ে প্রতিপক্ষকে হত্যা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। 

তার মতে, উত্তর সীমান্তে কাদা ছোড়াছুড়িতে জড়ানোর পরিবর্তে চীন তার প্রতিবেশীর (ভারত) ক্ষতি করার জন্য পাকিস্তানকে ব্যবহার করে থাকে।

তার মতে, এই সংঘাতে চীনের সম্পৃক্ততা গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির বাইরেও বিস্তৃত, যেখানে পাকিস্তান চীনা সামরিক সরঞ্জামের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী পাকিস্তানের ৮১ শতাংশ সামরিক সরঞ্জাম চীন থেকে আসে। 

এই সংঘর্ষে চীন বিশ্বের কয়েকটি দেশের আধুনিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে তার নিজস্ব অস্ত্রের সক্ষমতা পরীক্ষা করেছে, তাই এটি তাদের কাছে ভ্রাম্যমাণ ল্যাবের মতো।

এছাড়া, ভারতের সঙ্গে চলা সংঘাতের সময় পাকিস্তানকে ‘লাইভ ইনপুট’ বা তাৎক্ষণিক গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে চীন। এমনটাই দাবি করে ভারতের উপ-সেনাপ্রধান জানান, চীন বিশেষ করে ভারতের সামরিক মোতায়েন ও আক্রমণের গতিপথ সম্পর্কে পাকিস্তানকে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে।

রাহুল আরও বলেন, ‘মে মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত চলা সামরিক সংঘাতের অভিজ্ঞতা থেকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগ ও শিক্ষা ওঠে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের সেনা মোতায়েন নজরদারিতে চীনের স্যাটেলাইট ব্যবহার এবং ভারতের আরও উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা।’

তিনি বলেন, ‘ডিজিএমও (ডাইরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস) পর্যায়ের আলোচনায় পাকিস্তান বলছিল, ‘আমরা জানি তোমাদের অমুক দিকটা প্রস্তুত রাখা হয়েছে, অনুগ্রহ করে সেটা সরিয়ে নাও।‘ এটা প্রমাণ করে যে, চীন থেকে তারা লাইভ ইনপুট পাচ্ছিল। এটা এমন এক জায়গা, যেখানে আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’

তিনি আরও জানান, সিভিল-মিলিটারি ফিউশন এবং ‘সিফোরআইএসআর’-এর (কমান্ড, কন্ট্রোল, কমিউনিকেশন, কম্পিউটার, ইন্টেলিজেন্স, সার্ভেল্যান্স ও রিকনেসান্স) গুরুত্ব এই সংঘাত থেকে আবারও স্পষ্ট হয়েছে। এ সময় ভারতের নিজস্ব কিছু আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভালো কাজ করলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে দুর্বলতা ধরা পড়েছে।

তিনি বলেন, ‘এবার আমাদের জনবসতিপূর্ণ এলাকা খুব একটা লক্ষ্যবস্তু ছিল না। কিন্তু আগামীবার যে সেটা হবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই আমাদের আরও উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা, রকেট ও ড্রোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, এবং সেটা দ্রুত করতে হবে।’

চীনের প্রাচীন সামরিক কৌশলের প্রসঙ্গ টেনে সিংহ বলেন, ‘চীনের ৩৬টি সামরিক কৌশল ‘ধার করা ছুরি দিয়ে শত্রু হত্যা’ নীতিই এখানে প্রমাণিত হয়েছে। তারা নিজেরা সরাসরি সংঘাতে না জড়িয়ে প্রতিবেশী পাকিস্তানকে ব্যবহার করে আমাদের ক্ষতি করছে।’

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।