রোহিঙ্গা অধিকার আদায়ে নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল কাউন্সিল’ গঠন

রোহিঙ্গা অধিকার আদায়ে নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল কাউন্সিল’ গঠন

রোহিঙ্গা অধিকার আদায়ে নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল কাউন্সিল’ গঠন
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, নাগরিক অধিকার বঞ্চনা ও বারবার সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবার তাদের স্বার্থ ও অধিকার আদায়ে নতুন একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠন করেছে। ‘আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল কাউন্সিল’ (এআরএনসি) নামের এই সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এসেছে আজ রোববার।

সংগঠনটি জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করা। এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের অধিকার, নাগরিক স্বীকৃতি, রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি তুলে ধরতে চায় তারা।

নতুন গঠিত কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে রয়েছেন ৪০ জন সদস্য এবং সাধারণ কেন্দ্রীয় কমিটিতে ৬০ জন সদস্য, যারা রাখাইন রাজ্যের প্রায় সব শহর, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক কমিউনিটি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।

কাউন্সিলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দশকের পর দশক ধরে চলা বৈষম্য ও সহিংসতা—বিশেষ করে ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূল অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে এই ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক উদ্যোগের প্রয়োজন অনুভূত হয়।

এআরএনসি দাবি করেছে, সম্প্রতি রাখাইনে নিয়ন্ত্রণ নেওয়া জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আরাকান আর্মি’ নতুন করে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও দমনপীড়ন শুরু করেছে। তাদের তথ্যমতে, শুধুমাত্র সাম্প্রতিক মাসগুলোতেই আরাকান আর্মির হামলায় ২,৫০০’র বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে এবং আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। এই সহিংসতার শিকার হয়ে বহু রোহিঙ্গা সমুদ্র ও স্থলপথে প্রাণঘাতী যাত্রায় বাধ্য হচ্ছেন।

এআরএনসি এই পরিস্থিতিকে “পরিকল্পিত ও কাঠামোগত গণহত্যা” বলে আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অবিলম্বে কার্যকর হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতা এবং উদ্যোগের ঘাটতি রোহিঙ্গা সংকটকে আরও দীর্ঘায়িত ও ভয়াবহ করে তুলছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ, যাদের অধিকাংশই ২০১৭ সালের দমন-পীড়নের সময় পালিয়ে আসে। এদের প্রত্যাবাসন এখনো অনিশ্চিত। নতুন এই রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ে একটি কূটনৈতিক ও নৈতিক চাপ তৈরির লক্ষ্যেই কাজ শুরু করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।