কার পৃষ্ঠপোষকতায় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিদেশি নাগরিক অগাস্টিনা চাকমা?

কার পৃষ্ঠপোষকতায় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিদেশি নাগরিক অগাস্টিনা চাকমা?

কার পৃষ্ঠপোষকতায় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিদেশি নাগরিক অগাস্টিনা চাকমা?
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

মোঃ সাইফুল ইসলাম

কানাডার নাগরিক অগাস্টিনা চাকমা—পেশায় মডেল দাবি করলেও বাস্তবে তিনি বিতর্কিত পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পিসিজেএসএস-এর আন্তর্জাতিক মুখপাত্রে পরিণত হয়েছেন। কানাডায় বসবাসকারী এই নারী সম্প্রতি জাতিসংঘের এক্সপার্ট মেকানিজম অন দ্য রাইটস অব ইনডিজেনাস পিপলস (EMRIP)-এর ১৮তম অধিবেশনে বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেছেন। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তাঁর প্রকাশ্য অপপ্রচারে দেশজুড়ে ক্ষোভের ঝড় উঠেছে।

অগাস্টিনার রাজনৈতিক পরিচয় তাঁর রক্তেই—তিনি পিসিজেএসএস নেতা সন্তু লারমার নাতনি। সেই সন্তু লারমা যিনি ২৭ বছর ধরে সরকারের প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে যাচ্ছেন, শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেও সশস্ত্র সংঘাত জিইয়ে রেখেছেন। এবার তাঁর নাতনি সেই একই পথেই হাঁটলেন, শুধু ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে—আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে সেনাবাহিনীকেই করলেন নিশানা।

বিদেশি নাগরিক কীভাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হন?

অগাস্টিনা চাকমা একজন বিদেশি নাগরিক হয়েও কীভাবে বাংলাদেশের একটি সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘের মতো গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ফোরামে বক্তব্য রাখেন—এ প্রশ্ন এখন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের উচিত জাতিসংঘে এ বিষয়ে অবিলম্বে নোট ভার্বাল পাঠিয়ে জানানো যে, এই নারী বাংলাদেশের কোনও সরকারি বা স্বীকৃত প্রতিনিধিত্ব করেন না।

চাঁদাবাজি আর অপপ্রচারের সমন্বয়ে গড়ে উঠা নয়া আন্তর্জাতিক ফ্রন্ট

অগাস্টিনা চাকমা কানাডায় বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন—কিন্তু সেই জীবনের উৎস কী? পাহাড়ে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, অপহরণ আর অস্ত্র ব্যবসার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার যে অবৈধ অর্থ উপার্জন হয়, তার একটি অংশই যে এই অপপ্রচারের পেছনে খরচ হচ্ছে, তা স্পষ্ট।

উল্লেখযোগ্য যে, অগাস্টিনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত উগ্র পোশাকে হোটেল-বিলাসের ছবি দিয়ে ‘উষ্ণতা ছড়ান’। এসবই তাঁর “মডেলিং” ক্যারিয়ারের আড়ালে কর্পোরেট বিশ্বে বিনোদনের নামান্তর। অথচ তিনিই এখন জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে নিজ দেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন!

সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কথা, সন্ত্রাসীদের জন্য নীরবতা

যখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাহাড়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে লড়াই করে, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা রক্ষা করে এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছে, তখন অগাস্টিনা চাকমা সেই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে অপপ্রচার চালান। অথচ পাহাড়ে যারা গুম-খুন, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ ও সন্ত্রাসে লিপ্ত—তাদের বিষয়ে তাঁর মুখে একটি কথাও থাকে না।

এই অপপ্রচার কি রাষ্ট্রদ্রোহ নয়?

এতদূর এগিয়ে এসে প্রশ্ন উঠে—এই কর্মকাণ্ড কি রাষ্ট্রদ্রোহ নয়? অগাস্টিনার বক্তব্য ও তৎপরতা শুধু সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার নয়, এটি একটি সুসংগঠিত রাষ্ট্রবিরোধী আন্তর্জাতিক প্রচারণা। এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক মহলে আরও অপমানজনক অবস্থায় পড়তে হতে পারে বাংলাদেশকে।

সন্তু লারমাকে জিজ্ঞাসাবাদ সময়ের দাবি

সরকারের প্রতিমন্ত্রী মর্যাদায় থেকে যারা রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার সহায়তা করছেন, তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা জরুরি। সন্তু লারমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা এখন সময়ের দাবি—তাঁর নাতনি বিদেশ থেকে চাঁদাবাজির অর্থে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, তিনি কেন নীরব?

আন্তর্জাতিক এনজিও ও অপশক্তির ছত্রছায়ায় এই তৎপরতা

বিশ্বের কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ও এনজিও বছরের পর বছর ধরে পাহাড়ে অশান্তি বজায় রাখতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব এনজিও ও ফান্ডিং সংস্থার মাধ্যমেই অগাস্টিনাদের মত ‘মুখপাত্র’ তৈরি করা হয়। তারা যেন পাহাড়ি জনজীবনের বাস্তবতা নয়, কেবল একতরফা ভিকটিম হিসেবেই আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারে।

অগাস্টিনা চাকমা একজন বিদেশি নাগরিক, যিনি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। তাঁর এ অপপ্রচার রুখতে আইনি পদক্ষেপ এবং কূটনৈতিক পর্যায়ে কড়া বার্তা পাঠানো জরুরি। এটি শুধু সেনাবাহিনী নয়, বরং রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক মর্যাদার প্রশ্ন। এ মুহূর্তে চুপ থাকলে তা ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

প্রসঙ্গত, অতীতে তাঁর বিতর্কিত বক্তব্যের বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গণপ্রতিবাদ হয়েছিল। এবারও দেশবাসী সরকারের কঠোর পদক্ষেপ দেখতে চায়।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।