খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে আটক ৪, অভিযুক্তদের দাবি অপপ্রচার
![]()
নিউজ ডেস্ক
খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়ায় অষ্টম শ্রেণির এক ত্রিপুরা কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ওই কিশোরীকে ছয়জন যুবক পালাক্রমে ধর্ষণ করেছেন। ঘটনা রথযাত্রার দিন ভাইবোনছড়া মেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঘটে।
শিক্ষার্থীর পিতা বাদী হয়ে বুধবার রাতে খাগড়াছড়ি সদর থানার ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলার পরপরই বুধবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাত ৩টার দিকে চারজনকে আটক করে সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, চারজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আটককৃত ৪ আসামি হলো- খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের আরমান হোসেন (৩২), মো: সাকিব আলম (২৫), এনায়েত হোসেন (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (৩২)। মো. মুনির ইসলাম (২৯)। এই ঘটনায় অভিযুক্ত মো. সোহেল ইসলাম (২৩) পলাতক রয়েছে।
ভুক্তভোগী কিশোরী মানসিক চাপের কারণে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এবং বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর ও মানসিকভাবে বিপর্যস্থ। তাকে গুরুত্ব সহকারে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই রাতে কিশোরী তার কাকার বাসায় থাকার উদ্দেশ্যে ভাইবোনছড়া পুলিশ ফাঁড়ির কাছে যান। সেখানে পূর্বে ওঁত পেতে থাকা ছয় যুবক বাসায় ঢুকে অন্য এক উপজাতি যুবককে বেঁধে রেখে কিশোরীকে একটি কক্ষে আটকে দিয়ে ধর্ষণ করেন। ঘটনার পর ভিকটিম লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানায়নি। তবে বিষপানের পর জ্ঞান ফিরলে পরিবারের কাছে ঘটনাটি জানায়।
একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে অভিযুক্তরা সবাই বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।
ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরাম, বাংলাদেশ (টিএসএফ) ঘটনাটিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক রন বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রশাসনকে আরও কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।
অপরদিকে, অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগের সঙ্গে একমত নয়। তারা বলেন, ওই রাতে কিশোরী ও অন্য এক যুবকের সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয় এবং সেটি অভিযুক্তরা ওই কিশোরীকে হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলো। ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এ ধর্ষণ নাটক সাজানো হয়েছে। তারা অভিযোগটিকে অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন।
এ ঘটনায় বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করছে এবং দ্রুত সঠিক বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানা গেছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরোফিন জুয়েল বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই আমরা অভিযুক্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছি। বাকি দুইজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ধর্ষণের শিকার কিশোরী এখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।