পার্বত্য চট্টগ্রাম কারও করুণা নয়, এটি বাংলাদেশেরই ভূখণ্ড- রাবি উপাচার্য

পার্বত্য চট্টগ্রাম কারও করুণা নয়, এটি বাংলাদেশেরই ভূখণ্ড- রাবি উপাচার্য

পার্বত্য চট্টগ্রাম কারও করুণা নয়, এটি বাংলাদেশেরই ভূখণ্ড- রাবি উপাচার্য
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এখানকার সমস্যার সমাধান এককভাবে সরকারের দায়িত্ব নয়, বরং তা গোটা জাতির সচেতনতা ও সম্পৃক্ততার মাধ্যমেই সম্ভব—এমন মন্তব্য করেছেন বক্তারা। বুধবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে “পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ: সচেতনতা ও সম্পৃক্ততা” শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলে সংঘটিত বৈষম্য, সহিংসতা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড রুখতে সারাদেশের নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের ইস্যুর সাথে সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো গভীরভাবে জড়িত। সংস্কৃতিতে আঘাত এলেই তা পুরো জাতিসত্তার ওপর প্রভাব ফেলে। আজকের এই আলোচনায় আমরা একসঙ্গে ভাবছি, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে এবং এতে পাহাড়ি অঞ্চল কেমন ভূমিকা রাখবে—এটাই বড় অর্জন।”

অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শাহাব এনাম খান বলেন, “এই অঞ্চলের মানুষ শুধু অর্থনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিক ও মনস্তাত্ত্বিক বৈষম্যেরও শিকার। সমাধানের জন্য প্রয়োজন একটি ‘ন্যাশনাল ন্যারেটিভ’—যেখানে সকল জনগোষ্ঠীর ইতিহাস ও মর্যাদার স্বীকৃতি থাকবে।”

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের ইস্যুকে আর শুধু উপজাতি বা আদিবাসী বলেই দেখলে হবে না। আমাদের সবাইকে এক পরিচয়ে—বাংলাদেশী হিসেবে ভাবতে হবে।”

সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান পলাশ বলেন, “সেন্টমার্টিনের পর্যটন নিয়ে আমরা কথা বলি, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সোচ্চার হই। কিন্তু দেশের এক দশমাংশ এলাকা পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে জাতীয়ভাবে আমরা এখনো উদাসীন। অথচ এখানেই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ববিরোধী তৎপরতা দিন দিন বাড়ছে।”

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) ড. নাঈম আশফাক চৌধুরী বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে ছয়টি সশস্ত্র সংগঠন এখনও সক্রিয়ভাবে সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদে লিপ্ত। ‘আদিবাসী’ দাবির পেছনেও রয়েছে রাষ্ট্রবিরোধী আন্তর্জাতিক চক্রান্ত।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন মণ্ডল, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আব্দুর রহমান সিদ্দিকী, রাজশাহী বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কাসেম, ব্যারিস্টার আনেয়ার হোসেন, গবেষক ড. ফজলুল হক তুহিন প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে তথাকথিত ‘আদিবাসী অধিকার’ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ দাবির আড়ালে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সচেতন নাগরিক সমাজের উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। আজকের এই সেমিনারে তারই একটি সাহসী প্রতিবাদ ও বিশ্লেষণ উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।