উদ্ভাবনী গবেষণাই হবে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ভিত্তি- সেনাবাহিনী প্রধান
![]()
নিউজ ডেস্ক
মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি)-তে যন্ত্রকৌশল ও প্রয়োগিক বিজ্ঞানের ওপর তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘৩য় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড সায়েন্স (ICMEAS 2025)’ আজ শনিবার (১৯ জুলাই) শহীদ ইয়ামিন অডিটোরিয়ামে সমাপ্ত হয়েছে।
সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, মিশর, জাপান, কাজাখস্তান, ব্রুনেই, আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, সিঙ্গাপুর, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের খ্যাতনামা গবেষক, প্রকৌশলী ও পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেন। তারা যন্ত্রকৌশল, উৎপাদন প্রকৌশল, অ্যারোনটিক্যাল ও নেভাল ইঞ্জিনিয়ারিংসহ প্রয়োগিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় সাম্প্রতিক গবেষণা ও উদ্ভাবনের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
তিনি সেরা প্রবন্ধ উপস্থাপনকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এবং বলেন, “বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে হলে আমাদের প্রযুক্তি ও গবেষণায় উদ্ভাবনী চিন্তাধারার বিকল্প নেই। উদ্ভাবনী গবেষণাই হবে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ভিত্তি।”
সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে দেশের জন্য নৈতিক শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা অনেক ভালো শিক্ষাবিদ, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং সামরিক অফিসার তৈরি করছি। কিন্তু যদি তাদের নৈতিক শিক্ষা না থাকে, যদি তারা ভালো মানুষ না হয়, তাহলে দেশ তার কাছ থেকে প্রকৃত উপকার পাবে না।’ তিনি তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি সব সময় আপনাদের শৃঙ্খলাবোধ শেখার জন্য উৎসাহ দিই, ভালো মানুষ হওয়ার জন্য উৎসাহ দিই।’

এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে জ্ঞানচর্চা ও উদ্ভাবনের একটি অসাধারণ মঞ্চ হিসেবে অভিহিত করে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, এই আয়োজন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গবেষক ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে ধারণা বিনিময়ের একটি গতিশীল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। তিনি বিশ্বাস করেন, এই সম্মেলন অংশগ্রহণকারীদের নতুন কিছু শিখতে ও भविष्यের জন্য অনুপ্রাণিত হতে সাহায্য করবে।
সবশেষে শিক্ষার্থী ও উদীয়মান গবেষকদের সীমারেখা ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘কৌতূহলী থাকুন এবং উদ্ভাবনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকুন।’ তিনি এই সম্মেলনকে অংশগ্রহণকারীদের একাডেমিক ও পেশাগত জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সোপান হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এখান থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন। তিনি জ্ঞানচর্চায় অবদান রাখার জন্য সকল প্রতিনিধি ও গবেষকের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সম্মেলনে যে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে: নবায়নযোগ্য শক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্টারনেট অব থিংস (IIoT), তাপ প্রকৌশল, মহাকাশ ও অ্যাভিওনিক্স, অ্যারোডাইনামিক্স, হাইড্রোডাইনামিক্স, কম্পিউটেশনাল ফ্লুইড ডাইনামিক্স (CFD), ডিজাইন ও উৎপাদন, মেকাট্রনিক্স ও রোবোটিক্স।
সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমআইএসটি-এর কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মোঃ নাসিম পারভেজ। তিনি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এই সম্মেলনের মাধ্যমে দেশীয় প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এই সম্মেলন গবেষক, প্রকৌশলী, উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির সুযোগ এনে দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতে প্রযুক্তিনির্ভর টেকসই উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রসঙ্গত, এমআইএসটি দেশের প্রতিরক্ষা ও বেসামরিক খাতে প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। ICMEAS-এর মতো আন্তর্জাতিক সম্মেলন এই প্রতিষ্ঠানকে আরও বৈশ্বিকভাবে যুক্ত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।