নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল পুরো ভারত, জরুরি বৈঠকের ডাক মোদির
![]()
নিউজ ডেস্ক
প্রতিবেশী তিন দেশ থেকে যাওয়া অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে বহুল আলোচিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল ভারতে ব্যাপক প্রাণহানী ও সংঘাত বাড়তে থাকায় গত ২১ নভেম্বর শনিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রীসভার জরুরি এক বৈঠকের ডাক দেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিতর্কিত এই বিলের প্রতিবাদে বিভিন্ন প্রদেশে বিক্ষোভে জনতা-পুলিশের সংঘাতে ২০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। বিভিন্ন রাজ্যে জরুরী অবস্থা জারি করে এবং মোবাইল- ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করেও বিক্ষোভ দমনে ব্যর্থ হয়ে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সকল বিষয় ক্ষতিয়ে দেখতে মন্ত্রীসভার এ বৈঠক ডাকা হয় বলে জানা গেছে।
গত ২০ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় কংগ্রেসনেত্রী সোনিয়া গাঁন্ধি এক বিবৃতিতে নতুন এ নাগরিকত্ব আইনকে ’বৈষম্যমূলক’ উল্লেখ করে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ’বিক্ষোভ দমনে বর্বর শক্তি প্রয়োগ’ করার অভিযোগ তুলেন।
এদিকে, দেশটির উত্তর প্রদেশে যেখানে ১১ নিহত হয়েছে এবং আরো অনেকের অবস্থা আশংকাজনক বলে খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভ ঠেকাতে স্কুল ও মোবাইল সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, তবুও সহিংসতা এড়ানো যায়নি। সেখানে আট বছরের এক শিশুও গুলির আঘাতে নিহত হয়। তাছাড়া দিল্লি, আসামসহ ৮টি প্রদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আসামে মিছিলে হাজারো নারীরা অংশগ্রহণ করে। মমতা ব্যানার্জসহ ৬ রাজ্য থেকে এ আইন বাস্তবায়ন করা হবে না বলেও ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ৯ ডিসেম্বর সোমবার বিজেপি সরকার পার্লামেন্টে বিলটি তোলার পরও ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বিলটির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের আশঙ্কা এতে করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী ভারতে প্রবেশ করবে। নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের মাধ্যমে ভারতের ৬৪ বছরের পুরাতন নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৯৫৫ সালের ঐ আইনে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব পেতে হলে ভারতে থাকতে হবে ১১ বছর। তবে সংশোধিত বিলে বলা হয়েছে, হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা যদি প্রমাণ করতে পারে তারা পাকিস্তান, আফগানিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে এসেছে, তাহলে তারা পাঁচ বছরেই আবেদন করতে পারবে।
উল্লেখ্য, ছয় বছরের পরিশ্রম ও ১৬’শ কোটি টাকা খরচ করে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে হওয়া আসামের জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি)র চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়ে ১৯ লাখ মানুষ। এদের মধ্যে অন্তত ১৩ থেকে ১৪ লাখই হিন্দু। তালিকা প্রকাশ হতেই অস্বস্তিতে পড়ে দল বিজেপি। ঐ এনআরসি সঠিক নয় বলেও বিতর্ক শুরু হয় গোটা ভারতজুড়ে।