মিয়ানমারে ডিসেম্বরের নির্বাচনের প্রস্তুতি: স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন

মিয়ানমারে ডিসেম্বরের নির্বাচনের প্রস্তুতি: স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন

মিয়ানমারে ডিসেম্বরের নির্বাচনের প্রস্তুতি: স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

মিয়ানমারে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে দেশটির জান্তা সরকার। চার বছর ধরে সামরিক শাসনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা এলেও, কার্যত দায়িত্বে বহাল থাকছেন জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং। দেশটির শীর্ষ পর্যায়ে কোনো রদবদল না হওয়ায় রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো নতুন করে শঙ্কা প্রকাশ করছে—এই নির্বাচনের স্বচ্ছতা, গ্রহণযোগ্যতা ও গণতান্ত্রিক মানদণ্ড আদৌ রক্ষা পাবে কিনা তা নিয়ে।

জান্তা সরকারের দমন-পীড়নের রেকর্ড এবং মিন অং হ্লাইংয়ের সরাসরি প্রেসিডেন্ট পদে থেকে নির্বাচনের আয়োজন করাকে প্রশ্নবিদ্ধ বলছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের আশঙ্কা, সামরিক বাহিনীর অনুগতদেরকেই নির্বাচনে জয়ী করতে এই আয়োজন। এরই মধ্যে বহু বিরোধীদল ডিসেম্বরের এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে।

মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তা বাহিনীর হাতে ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, গ্রেপ্তার হয়েছেন ২০ হাজারের বেশি। অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৫ লাখ। এই বাস্তবতায় দেশটিতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

মিয়ানমার বিষয়ক স্বাধীন পর্যবেক্ষক ডেভিড ম্যাথুসন বলেছেন, জান্তার ঘোষিত ‘ক্ষমতা হস্তান্তর’ আসলে একটি কৌশলমাত্র, যাতে ক্ষমতা সামরিক নেতৃত্বের হাতেই থাকে। তার মতে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে চলমান সংঘর্ষ, নিয়ন্ত্রণহীন অঞ্চল এবং স্থায়ী নিরাপত্তাহীনতা প্রমাণ করে, মিয়ানমারে নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি হয়নি।

গত বছর ভোটার তালিকা তৈরির জন্য একটি জনশুমারি চালায় জান্তা সরকার, যেখানে ৩৩০টি টাউনশিপের মধ্যে মাত্র ১৪৫টির তালিকা সম্পন্ন হয়েছে। এতে বোঝা যায়, দেশের বড় একটি অংশে জান্তা সরকারের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নেই।

অন্যদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ৬৩টি টাউনশিপে সামরিক শাসন জারি করেছে জান্তা সরকার। কিন্তু এদের মধ্যে ৪৬টি রয়েছে বিদ্রোহীদের দখলে, আর বাকি ১৬টির শহরাঞ্চল ছাড়া বাকি অংশে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেই। সংঘর্ষ এখনও অব্যাহত।

জান্তা নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২৬৭টি টাউনশিপে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। কিন্তু পর্যবেক্ষকদের মতে, যতক্ষণ না পর্যন্ত সরকার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারছে, ততদিন এসব এলাকায় নির্বাচন সম্ভব নয়।

উল্লেখ্য, নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টায় থাকলেও মিয়ানমারের জান্তা সরকারের এই উদ্যোগ বিশ্ব সম্প্রদায়ের চোখে এখনও ‘প্রহসন’ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

You may have missed