আসামে অবৈধ অনুপ্রবেশে স্থানীয় যুবকদের সম্পৃক্ততা নিয়ে উদ্বেগ মুখ্যমন্ত্রীর
![]()
নিউজ ডেস্ক
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রাজ্যে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের ঘটনায় স্থানীয় যুবকদের সম্পৃক্ততা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে বিজেপির আইটি সেলের জাতীয় কনভেনার অমিত মালব্যর করা বাংলাভাষা বিষয়ক বিতর্কিত মন্তব্য থেকে দলকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) বরাক উপত্যকার শিলচরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশিদের ভারতে প্রবেশে সহযোগিতা করতে স্থানীয় দালালরা প্রতি জনের কাছ থেকে প্রায় ২০ হাজার রুপি নিচ্ছে। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এমনকি এ দালালদের মধ্যে অনেকেই আসামের হিন্দু যুবক।”
তিনি জানান, একটি সক্রিয় সিন্ডিকেট বাংলাদেশ থেকে মানুষ পাচারের সঙ্গে জড়িত। তবে এরই মধ্যে এই নেটওয়ার্কের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনুপ্রবেশকারীরা মূলত ত্রিপুরা, দাউকি, মানকাচর ও শ্রীভূমি সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছে বলে তথ্য দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আটক হওয়া ব্যক্তিদের তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং নতুন অনুপ্রবেশ ঠেকাতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে “বাংলাদেশি ভাষা” আখ্যা দেয়ায় সৃষ্ট বিতর্ক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী শর্মা বলেন, “কীভাবে বাংলা কেবল বাংলাদেশি ভাষা হতে পারে? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর—যিনি নোবেল বিজয়ী—পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ছিলেন। বাংলা ভাষা ‘ক্লাসিক্যাল ল্যাঙ্গুয়েজ’ মর্যাদা পেয়েছে এবং এটি ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভাষা। বিজেপি সবসময় বাংলাভাষাকে শ্রদ্ধা করে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।”
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট দিল্লি পুলিশ এক যোগাযোগপত্রে বাংলা ভাষাকে “বাংলাদেশি ভাষা” হিসেবে উল্লেখ করলে ব্যাপক সমালোচনা হয়। তৃণমূল কংগ্রেস এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। পরে বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য সেই বক্তব্যের পক্ষ নিলে বিতর্ক আরও বাড়ে। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করেন, “আসলে এককভাবে ‘বেঙ্গলি’ নামে কোনো ভাষা নেই। ‘বাংলাদেশি ভাষা’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়েছে অভিবাসীদের সনাক্ত করতে, পশ্চিমবঙ্গের ভাষার প্রতি কোনো মন্তব্য নয়।”
এই বিতর্কে হিন্দু বাঙালি সমাজে অস্বস্তি দেখা দেয়। তবে মুখ্যমন্ত্রী শর্মা আশ্বাস দিয়েছেন যে, বরাক উপত্যকার কোনো বাঙালি হিন্দুকে আধার সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।
প্রসঙ্গত, আসামে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ইস্যু এবং বাংলাভাষা নিয়ে সাম্প্রতিক এই বিতর্ক স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।