কুকি জঙ্গিদের সঙ্গে অস্ত্রবিরতি বাতিলের দাবি, ৩৫ পৃষ্ঠার স্মারকলিপি দিলো থাদৌ ইনপি

কুকি জঙ্গিদের সঙ্গে অস্ত্রবিরতি বাতিলের দাবি, ৩৫ পৃষ্ঠার স্মারকলিপি দিলো থাদৌ ইনপি

কুকি জঙ্গিদের সঙ্গে অস্ত্রবিরতি বাতিলের দাবি, ৩৫ পৃষ্ঠার স্মারকলিপি দিলো থাদৌ ইনপি
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

কুকি জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান অস্ত্রবিরতি চুক্তি (SoO) অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে মণিপুরের থাদৌ সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ সংগঠন থাদৌ ইনপি মণিপুর (TIM)। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও মণিপুর-আসাম রাজ্য সরকারকে উদ্দেশ্য করে সংগঠনটি ৩৫ পৃষ্ঠার এক স্মারকলিপি দিয়েছে।

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়েছে, শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে এই অস্ত্রবিরতি চুক্তি থাদৌ জনগণের ওপর সহিংসতা, নিপীড়ন ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহ দিয়েছে।

থাদৌরা নিজেদের কুকি নয়, বরং স্বতন্ত্র জাতিগোষ্ঠী হিসেবে দাবি করেছে। তারা বলেছে, ‘কুকি’ শব্দটি ঔপনিবেশিক ধারণা, আর মিয়ানমারে থাদৌরা স্বতন্ত্রভাবে চিন সম্প্রদায়ের অধীনে নিজস্ব জনগণনা কোডে স্বীকৃত। TIM-এর মতে, ১৯৭০-এর দশকে “কুকি আধিপত্যবাদী মতাদর্শ” থেকে এই সংকটের শুরু এবং ১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে তা তীব্র আকার ধারণ করে।

সংগঠনটির অভিযোগ, SoO চুক্তি কুকি জঙ্গিদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে, যার সুযোগে তারা গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল করে একটি “সামান্তরাল কর্তৃত্ব” প্রতিষ্ঠা করেছে এবং থাদৌ জনগণের ওপর সাংস্কৃতিক নিপীড়ন চালাচ্ছে। এ কাজে কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (KNO), কুকি ইনপি, কেএসও এবং কুকি ক্রিশ্চিয়ান কাউন্সিল সক্রিয়ভাবে ঘৃণা ও উগ্রবাদী প্রচার চালাচ্ছে। এমনকি কেএনও প্রধান পি.এস. হাওকিপ ও সাইকটের বিধায়ক পাওলিয়েনলাল হাওকিপকেও এই উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচারের জন্য দায়ী করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ, বুথ দখল, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, ব্লক ভোটিংয়ের মতো কর্মকাণ্ডে থাদৌদের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি কল্যাণমূলক প্রকল্পে দুর্নীতি, আর্থিক অপরাধ, অস্ত্র চোরাচালান এবং যুবকদের সীমান্তপারের সংগঠন যেমন কুকি ন্যাশনাল আর্মি–বার্মায় নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে।

এছাড়া SoO-এর সঙ্গে মাদক ও পপি চাষ বৃদ্ধির সরাসরি যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করে TIM দাবি করেছে, মণিপুর এখন স্বর্ণত্রিভুজের মতো মাদক উৎপাদন ও পাচারের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। এর ফলে পরিবেশ ধ্বংস ও সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টি হচ্ছে।

তাদের অভিযোগ, SoO চুক্তিভুক্ত জঙ্গিরা সরাসরি সহিংসতায় জড়িত। ২০২৩ সালের ৩ মে তোরবুং-বাংলা হামলা এবং চলতি বছরের ৩০ আগস্ট আসামের কারবি আংলংয়ে থাদৌ সাহিত্য পরিষদের চেয়ারম্যান পু নেহকাম জমহাও হত্যাকাণ্ডে কুকি জঙ্গিদের হাত রয়েছে। থাদৌ পরিচয় রক্ষার কারণে জমহাওকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি সংগঠনটির।

TIM অস্ত্রবিরতি চুক্তিকে “অসাংবিধানিক ও অনির্দিষ্টকালের” বলে উল্লেখ করে সতর্ক করেছে, এর ধারাবাহিকতা ভারতের অখণ্ডতার জন্য ভয়াবহ হুমকি তৈরি করবে। স্মারকলিপিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে SoO চুক্তি বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছে। সংগঠনটির মতে, দুই দশকের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে যে এ চুক্তি কেবল অস্থিতিশীলতা, সন্ত্রাস ও থাদৌ জনগণের পরিকল্পিত নিপীড়নকেই বাড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, কুকি–থাদৌ বিরোধ দীর্ঘদিন ধরেই মণিপুর রাজনীতিতে অস্থিরতার কারণ হয়ে আছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

You may have missed