ইন্টারনেট প্রতারণা কেন্দ্রে অভিযান: স্টারলিংকের ৪০টি ডিভাইস জব্দ করল মিয়ানমার জান্তা বাহিনী
![]()
নিউজ ডেস্ক
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা দেশটির সবচেয়ে কুখ্যাত ইন্টারনেট প্রতারণা কেন্দ্রগুলোর একটিতে অভিযান চালিয়েছে এবং বেশ কিছু স্টারলিংক ডিভাইস জব্দ করেছে। বার্তা সংস্থা এএফপির একটি তদন্তে বিলিয়ন ডলারের এই কালো বাজারে স্টারলিংকের ব্যবহার ব্যাপকহারে বেড়ে যাওয়ার তথ্য প্রকাশের পরই এই অভিযান চালানো হলো। সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
করোনাভাইরাস মহামারির পর থেকে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত মিয়ানমারের আইনহীন সীমান্ত অঞ্চলে এই ইন্টারনেট কেন্দ্রগুলো ফুলেফেঁপে উঠেছে। এখানে কর্মীরা প্রেম বা ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়। গত ফেব্রুয়ারি থেকে থাই, চীনা ও মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সমন্বিত অভিযানে প্রায় ৭ হাজার কর্মীকে উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের অনেকে জোর করে পাচার করে সুরক্ষিত এই কেন্দ্রগুলোতে কাজ করানো হচ্ছিল।
তবে, এএফপির এই মাসের তদন্তে দেখা যায়, প্রতারণা কেন্দ্রগুলোতে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ চলছে এবং ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা তাদের ছাদে বসানো হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ‘দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার’ জানিয়েছে, সামরিক বাহিনী মিয়ানমার-থাই সীমান্তের কাছে কেকে পার্কে অভিযান চালায় এবং ৩০ সেট স্টারলিংক রিসিভার এবং আনুষাঙ্গিক জব্দ করেছে’। রাষ্ট্রীয় মুখপাত্র সংবাদপত্রটি আরও জানায়, জান্তা সৈন্যরা প্রায় ২০০ ভবন দখল করে এবং স্থানটিতে প্রায় ২ হাজার ২০০ কর্মীকে খুঁজে পায়।
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ সংক্রান্ত দপ্তরের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই প্রতারণা চক্রগুলো বৃহত্তর অঞ্চলের মানুষের কাছ থেকে ৩৭ বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে।
মিয়ানমারে স্টারলিংকের লাইসেন্স নেই। ফেব্রুয়ারির ব্যাপক অভিযানের আগে এটি দেশের ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীদের তালিকায় স্থান পায়নি। তবে, এশিয়ার সংস্থা এপিএনআইসির তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ের ৩ তারিখ থেকে অক্টোবর মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত এটি প্রতিদিন শীর্ষ ইন্টারনেট সরবরাহকারী হিসাবে ছিল। এএফপির তদন্তের পর স্টারলিংক কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে, স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে, থাই-মিয়ানমার সীমান্তে মোয়াই নদীর ধারে থাকা আনুমানিক ২৭টি প্রতারণা কেন্দ্রের মধ্যে অনেকগুলোতে অফিস এবং ডরমিটরি ব্লক খুব দ্রুত তৈরি হচ্ছে।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমার এই প্রতারণা কেন্দ্রগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হলেও, এই ধরনের কার্যক্রম এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোতেও দেখা যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ সোমবার জানিয়েছে, কম্বোডিয়া থেকে নির্বাসিত ৪৫ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তারা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে, যারা সেখানে সাইবার প্রতারণা কার্যক্রমে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।