বাঘাইছড়িতে জেএসএস সন্ত্রাসীদের হামলা: বাঙালি জজ মিয়ার বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট

বাঘাইছড়িতে জেএসএস সন্ত্রাসীদের হামলা: বাঙালি জজ মিয়ার বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট

বাঘাইছড়িতে জেএসএস সন্ত্রাসীদের হামলা: বাঙালি জজ মিয়ার বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের সারোয়াতলী মধ্যবর্তী মাহিল্যা–কবিরপুর গ্রামে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএসের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় এক বাঙালি পরিবারের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে এলাকায় বসবাসরত বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উক্ত এলাকার পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভূমি বিরোধ চলে আসছে। বিতর্কিত জমিটি সরকারি রেকর্ডে বাঙালিদের নামে নিবন্ধিত থাকলেও, জেএসএস সন্ত্রাসীদের প্রভাবে কিছু পাহাড়ি লোক প্রথাগত অধিকারের অজুহাতে জায়গাটি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি বাঙালিরা সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলে সন্ত্রাসীরা উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

ভুক্তভোগী জজ মিয়ার পরিবারের সদস্যরা জানান, “রাতে হঠাৎ কয়েকজন অস্ত্রধারী এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে, আমাদের মারধর করতে উদ্যত হয়। তারা সব কিছু ভাঙচুর করে লুটপাট চালায়। আমরা প্রাণে বাঁচতে পাশের বনে পালিয়ে যাই।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, জেএসএস সন্ত্রাসীরা হামলার পর ঘটনাটিকে আড়াল করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা প্রচারণা চালায়—বলে, পাহাড়ি গ্রামে নাকি বাঙালিরা হামলা চালিয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে গেলে এসব দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়।

একজন স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, “অনেক সময় সন্ত্রাসীরা নিজেরাই নিজেদের ঘরে আগুন লাগায়, পরে বলে বাঙালিরা হামলা করেছে। এরপর বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ নেয়। এটা বহুদিনের পুরনো কৌশল।”

ঘটনার পর সেনাবাহিনীর একটি টহল দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেনা টহল জোরদার করায় বড় ধরনের সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

রাতে সেনাবাহিনী চলে যাওয়ার পরও এলাকাজুড়ে কয়েকশো উপজাতি লোক জড়ো হয়ে অবস্থান নেয়, তবে সেনাবাহিনীর নিয়মিত টহল ও সতর্ক উপস্থিতির কারণে পরবর্তীতে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

স্থানীয় এক নারী বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষ। আমরা শুধু নিজের জমিতে ঘর করে থাকতে চেয়েছি। কিন্তু যারা নিজেদের অধিকার দাবি করে বেড়ায়, তারাই আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে।”

বর্তমানে এলাকায় সেনা টহল অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি আপাতত স্বাভাবিক রয়েছে। তবে স্থানীয়দের আশঙ্কা, পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনটির পুনরায় হামলার চেষ্টা যেকোনো সময় ঘটতে পারে।

এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত ও নিরাপত্তা জোরদারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন এলাকায় সশস্ত্র গ্রুপগুলোর আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও বাঙালি বসতবাড়িতে হামলার ঘটনা বেড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এসব ঘটনার পর এলাকাবাসী সেনাবাহিনীর নিয়মিত টহল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখার দাবি জানিয়েছেন।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *