পর্যটনের আড়ালে গোপন ধর্মান্তর প্রচেষ্টাকে ‘অপপ্রচার’ দাবি করে বান্দরবানে মানববন্ধন

পর্যটনের আড়ালে গোপন ধর্মান্তর প্রচেষ্টাকে ‘অপপ্রচার’ দাবি করে বান্দরবানে মানববন্ধন

পর্যটনের আড়ালে গোপন ধর্মান্তর প্রচেষ্টাকে ‘অপপ্রচার’ দাবি করে বান্দরবানে মানববন্ধন
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটনের আড়ালে গোপন ধর্মান্তর প্রচেষ্টার অভিযোগ এবং সেই অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ উল্লেখ করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বান্দরবানের খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা। আজ শনিবার সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাবের সামনেই খ্রিষ্টান যুব ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি জন ত্রিপুরা, লেলুং খুমী, দীনেন্দ্র ত্রিপুরা ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লালজার লম বম সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, পাহাড়ি খ্রিষ্টান সম্প্রদায় শত শত বছর ধরে এ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান জনগোষ্ঠী। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবিক উন্নয়নে খ্রিষ্টান সংস্থাগুলোর ভূমিকা বহু পুরনো— তাদের অভিযোগ, এটিকে ধর্মান্তর অভিযানের ছদ্মবেশ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

জন ত্রিপুরা বলেন— ত্রিপুরা ও বম সম্প্রদায়ের মানুষ শত শত বছর ধরে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। তাই তাদের ‘নতুন করে খ্রিষ্টান বানানোর’ অপপ্রচার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। ধর্মকে ঘিরে উস্কানিমূলক বার্তা দেওয়া বন্ধ করতে হবে।

শর্তভঙ্গ করে বান্দরবানে বিদেশি নাগরিকদের ধর্মীয় কার্যক্রম: পর্যটনের আড়ালে গোপন ধর্মান্তর প্রচেষ্টা

মানববন্ধনে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের সংবেদনশীল ধর্মীয় পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহতের আহ্বান জানান। পাশাপাশি প্রশাসনের কাছে সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি তোলেন।

সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষাপট

গত ২০ অক্টোবর দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মোট ১২ জন নাগরিক পর্যটক পরিচয়ে বান্দরবানে প্রবেশ করে ‘লাইফ ওয়ার্ড মিশন’ নামে বাংলাদেশে অনিবন্ধিত একটি সংগঠনের উদ্যোগে হোটেল ডি’মোর-এ ধর্মীয় সভা আয়োজন করেন। সেখানে বাইবেল পাঠ, ভক্তিগান ও উপদেশের মাধ্যমে ধর্মীয় প্রচারণা চালানো হয় বলে প্রশাসনের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে।

পরদিন ২১ অক্টোবর পার্বত্য নাগরিক পরিষদের বিক্ষোভের মুখে ওই বিদেশিরা পুলিশ স্কটের মাধ্যমে বান্দরবান ত্যাগ করেন। প্রশাসন জানায়, প্রবেশ অনুমতির শর্ত ভঙ্গ করে তারা ভ্রমণের আড়ালে ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

প্রশাসনের একটি অংশ এই কার্যক্রমের পেছনে বিদেশি তহবিল, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রভাব বিস্তারের প্রশ্নও খতিয়ে দেখছে।

স্থানীয়রা মনে করছেন— বিশ্বাসের স্থানে বিভাজন নয়, বরং পারস্পরিক আস্থা ও সহাবস্থানের ভিত্তিতেই পাহাড়ের শান্তি টিকে থাকতে পারে।

উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বেশ কয়েকটি এনজিও’র আড়ালে গোপনে চলমান মিশনারী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এসব ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এনজিও’র আড়ালে পরিচালিত এই মিশনারী কার্যক্রমে সহযোগিতা ও অর্থায়ন দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য খ্রিস্টান দেশ ও প্রতিষ্ঠান। গোপন এই চক্রান্তের লক্ষ্য পার্বত্য চট্টগ্রামকে দীর্ঘমেয়াদে খ্রিস্টান প্রভাববিস্তার এবং ধর্মীয় পরিচয়ের পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি ভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থানে নিয়ে যাওয়া।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *