পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্নকরণ ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ
![]()
নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খাইরুল ইসলাম চৌধুরী, নারী পক্ষের ও সরকারের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরিন পারভিন হক, প্রথম আলোর সাংবাদিক সোহরাব হাসান, এএলআরডির নির্বাহী শামসুল হক এবং নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী জাকির হোসেনের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় “সেভ বাংলাদেশ–সেভ সিএইচটি” নামে একটি প্ল্যাটফর্ম শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে। পরে তারা শাহবাগ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে গিয়ে কর্মসূচি শেষ করে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে “পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি” শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নেওয়া উল্লিখিত ব্যক্তিরা রাষ্ট্রবিরোধী, উসকানিমূলক ও বিভাজনকারী বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের বক্তব্যকে বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি সরাসরি হুমকি বলে উল্লেখ করেন।
সমাবেশে তুলে ধরা অভিযোগ অনুযায়ী, আলোচনায় বক্তারা পাহাড়ে বাঙ্গালিদের বসবাসকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতিনাশের প্রচেষ্টা বলে দাবি করেন, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন, কেএনএফ–এর আটক সন্ত্রাসীদের মুক্তির দাবি জানান, পাহাড়ে জাতিসংঘ মিশন ও হস্তক্ষেপ আহ্বান করেন এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে বিদ্রোহে উস্কে দেন। এসব বক্তব্যকে “সাংগঠনিকভাবে পরিকল্পিত দেশবিরোধী বিভাজনমূলক প্রচারণা” হিসেবে উল্লেখ করেন বিক্ষোভকারীরা।
বক্তারা বলেন, এ সমস্ত মন্তব্য বিদেশে দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশ। সরকারের প্রতি তারা অবিলম্বে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদানের দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তারা আরও দাবি করেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক নকশা অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামকে কখনো ফিলিস্তিন–ইসরাইল মডেলে রূপান্তরের চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই পুরনো পরিকল্পনাকে আবারও সামনে আনার জন্য কিছু ব্যক্তি এনজিও’র আড়ালে ‘আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ’ চাওয়ার মাধ্যমে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছেন। তারা এ ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দেন।
সমাবেশে বক্তব্য দেন— হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মীর ইদ্রিস আলী নদভী, তাহরিক–এ–খাতমে নুবুওয়্যাত বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি সাওবান সাকিব, ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী শাহাদাত ফরাজী সাকিব, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইলিয়াস মাতাব্বর, ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন অনিক, সিএইএটি সম্প্রীতি জোটের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জকসুর জিএস প্রার্থী আহমাদ রেজাসহ আরও অনেকে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে বিভিন্ন মহলের বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়া ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, যা নিয়ে দেশে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।