প্রথম আলোর জরিপ: সেনাবাহিনীর ভূমিকা ভালো মনে করেন বেশির ভাগ মানুষ
![]()
নিউজ ডেস্ক
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর ভূমিকা ভালো ছিল বলে মনে করেন দেশের বেশির ভাগ মানুষ। গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকাতেও সন্তুষ্ট তাঁরা।
এখন থেকে নির্বাচনের সময় পর্যন্ত দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা সন্তোষজনক হবে বলেও মনে করছেন অধিকাংশ মানুষ। এ জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচনেও সেনাবাহিনীর সহযোগিতা থাকলে ‘ভালো’ হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
প্রথম আলোর উদ্যোগে করা ‘গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপ-২০২৫’-এ এই মতামত উঠে এসেছে। প্রথম আলোর জন্য জরিপটি করেছে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কিমেকারস কনসাল্টিং লিমিডেট।
জরিপে প্রশ্ন করা হয়েছিল, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর ভূমিকা কেমন ছিল? উত্তরে ৫২ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ বলেছেন, সেনাবাহিনীর ভূমিকা ভালো ছিল। আরও ১৭ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ বলেছেন, খুবই ভালো ছিল, অর্থাৎ ৬৯ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষই গণ-অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর ভূমিকায় সন্তুষ্ট।
আবার ২৩ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ মনে করেন, ওই সময়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা ভালো ছিল না, খারাপও ছিল না। তবে ৬ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ মনে করেন, গণ-অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর ভূমিকা খারাপ ছিল। আর ১ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষের মত হলো তখন সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিল খুবই খারাপ।

জরিপে আরেকটি প্রশ্ন ছিল, গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা কেমন ছিল? উত্তরে ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ বলেছেন, এ সময়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা ভালো ছিল। আর ১৫ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় খুবই ভালো ছিল সেনাবাহিনীর ভূমিকা। দুইয়ে মিলে ৭৪ শতাংশ মানুষ সেনাবাহিনীর ভূমিকায় সন্তুষ্টির কথা বলেছেন।
তবে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে ভালো বা খারাপ—কোনোটাই বলেননি। ৫ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ মনে করেন, এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ভূমিকা ভালো নয়। আর ৩ দশমিক ২ শতাংশের মত হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা খুবই খারাপ।
জরিপে আরেকটি প্রশ্ন ছিল—এখন থেকে নির্বাচনের সময় পর্যন্ত দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা কেমন হবে? ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, এ সময়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা ভালো হবে। আরও ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ মনে করেন, খুবই ভালো হবে, অর্থাৎ ৮৫ দশমিক ১ শতাংশ মানুষই এখনো সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখছেন।
যদিও ১২ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মনে করেন, নির্বাচনের সময় পর্যন্ত দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা ভালো হবে না, খারাপও হবে না। ২ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ মনে করেন, এ সময়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা ভালো হবে না। আবার শূন্য দশমিক ২ শতাংশ মানুষ মত হলো এ সময়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা হবে খুবই খারাপ।
এই জরিপে দেশের পাঁচটি নগর ও পাঁচটি গ্রাম বা আধা শহর অঞ্চলের প্রাপ্তবয়স্ক (১৮ থেকে ৫৫ বছর) ১ হাজার ৩৪২ জনের মতামত নেওয়া হয়। এর মধ্যে পুরুষ ৬৭৪ জন ও নারী ৬৬৮ জন। এই মানুষেরা বিভিন্ন আয়, শ্রেণি ও পেশার। গত ২১ থেকে ২৮ অক্টোবর জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

জরিপকারী প্রতিষ্ঠান বলেছে, এটি একটি মতামত জরিপ। এটি দেশের প্রতিনিধিত্বমূলক জরিপ, তবে নির্দিষ্টভাবে কোনো নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে না। জরিপের নমুনা এমন মানুষদেরই তুলে ধরেছে, যাঁরা অনলাইন অথবা ছাপা পত্রিকা পড়তে পারেন এবং আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জরিপের ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতার (কনফিডেন্স লেভেল) মাত্রা ৯৯ শতাংশ।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী সহযোগিতা করলে নির্বাচনের ওপর তার কেমন প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন—এমন একটি প্রশ্নও ছিল জরিপে। এতে দেখা গেছে, ৫৩ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ বলছেন, ভালো প্রভাব পড়বে। আর ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ মনে করেন, খুবই ভালো প্রভাব পড়বে, অর্থাৎ ৮০ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ এখানে সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থার কথা বলছেন।
এর বাইরে ১৫ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ মনে করেন, সেনাবাহিনী সহযোগিতা করলে নির্বাচনে এর ভালো বা খারাপ কোনো প্রভাবই পড়বে না। ৩ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ মনে করেন, খারাপ প্রভাব পড়বে। আর শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ মানুষের মত হলো খুবই খারাপ প্রভাব পড়বে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।