পার্বত্য নাগরিক পরিষদের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করে সংবাদ সম্মেলন - Southeast Asia Journal

পার্বত্য নাগরিক পরিষদের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করে সংবাদ সম্মেলন

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি সংগঠনগুলো বিলুপ্ত করে ঐক্যবদ্ধ সংগঠন “পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ”র আত্নপ্রকাশের প্রায় তিন মাস পর সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্টিজ মিলনায়তনে সংগঠনটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে আলকাছ আল মামুন, কাজী মজিবুর রহমান, অধ্যক্ষ আবু তাহের, মণিরুজ্জামান মণির, শেখ আহম্মেদ রাজু, কাজী নাছিরুল আলম, আব্দুর হামিদ রানা, আলমগীর কবির, এ্যাড. আলম খান, মোঃ আব্দুল মজিদ, এসএমু মাসুম রানাসহ সংগঠনটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, বর্তমানে পাহাড়ের চারটি সশস্ত্র সংগঠন একদিকে যেমন চাঁদাবাজি ও রাহাজানির মাধ্যমে জনজীবন বিপন্ন করে তুলেছে, অন্যদিকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে প্রায়ই তারা নিজেরাই সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে জীবন ও সম্পদের হানি ঘটিয়ে পাহাড়ের পরিবেশ আরো ঘোলাটে করে তুলছে। তাদের আধিপত্য বিস্তারের অংশ হিসেবেই নিপীড়নের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ ক্ষেত্রে পাহাড়ি-বাঙালি কেউ সন্ত্রাসীদের নিপীড়ন থেকে রেহাই পাচ্ছে না। একটি বিশেষ গোত্র ছাড়া অন্যান্য সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ আজ এই সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতিনিয়তই সবুজ পাহাড়ে রক্ত ঝরছে। কখনও বাঙালিদের আবার কখনও বা পাহাড়িদের। খুনের পাশাপাশি পাহাড়ের ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন শিল্প ও কৃষি খাত স্থবির হয়ে রয়েছে চাঁদাবাজির যাতাকলে। একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি ও উপজাতীয়দের মধ্যে সহিংসতা ও সংঘাত তৈরি করে এবং উপজাতীয়দের বিপন্নতা প্রদর্শন করে আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভূতি অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্পর্শকাতর জাতীয় ইস্যুতে বিদেশী শক্তিকে জড়ানো হচ্ছে বলে সকল আলামত স্পষ্ট। এ সময় পাহাড়ি-বাঙালি ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য তাগিদ দেয়া হয়।

পরে প্রকাশিত তালিকায় আলকাছ আল মামুনকে সভাপতি, আলমগীর কবিরকে সাধারণ সম্পাদক ও মাঈন উদ্দিনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করার কথা জানা গেছে। এছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে কাজী মুজিবুর রহমান, অধ্যক্ষ আবু তাহের, মনিরুজ্জামান মনির, সহ-সভাপতি পদে এ্যাড. পারভেজ তালুকদার, শেখ আহমদ রাজু, কাজী নাছিরুল আলম, আব্দুল হামিদ রানা, আলীকদম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম, সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদে এ্যাড. আলম খান, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মজিদ, এস এম মাসুম রানা, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদে আবু বকর সিদ্দিক, বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম, এ্যাড. মৃদুল বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান ডালিম, মোঃ নাসির উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক পদে মোঃ সোলায়মান, দপ্তর সম্পাদক পদে মোঃ লোকমান হোসেন, প্রচার সম্পাদক পদে মোঃ শাহজাহান আলমসহ ৪৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে সহ-সভাপতি পদে ৩টি, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদ ২টি, সাংগঠনিক ১টি, সহ-সাংগঠনিক ৩টি, সহ অর্থ সম্পাদক ১টি, সহ দপ্তর সম্পাদক পদ ১টি, সহ তথ্য ও গবেষণা ২টি, সহ ক্রীড়া সম্পাদকে ১টি পদ খালি রাখা হয়েছে, যা পরবর্তীতে সর্বসম্মতিক্রমে পূরণ করা হবে বলে জানা গেছে।

এর আগে, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি বাঙালী সংগঠন বিলুপ্ত ঘোষনা করে পাহাড়ী-বাঙ্গালী উভয় সম্প্রদায়ের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আত্নপ্রকাশ ঘটে “পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ”র। এ সময় এই সংগঠনের অঙ্গ সংগঠন হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা পরিষদ নামের দুটি সংগঠনের নাম ঘোষণা করা হয়।

এই সংগঠন শুধুমাত্র বাঙালিদের নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে সকল নিপীড়িত মানুষের অংশগ্রহণের দ্বারও উন্মোচন করবে বলেও সেসময় আশা প্রকাশ করেন সংগঠনটির নেতারা।