ঢাকা-চট্টগ্রামে কর্মরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিজ এলাকায় ফেরত আনতে পার্বত্য মন্ত্রীর কাছে এক পুলিশ কর্মকর্তার খোলা চিঠি - Southeast Asia Journal

ঢাকা-চট্টগ্রামে কর্মরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিজ এলাকায় ফেরত আনতে পার্বত্য মন্ত্রীর কাছে এক পুলিশ কর্মকর্তার খোলা চিঠি

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে ভীতি ও অনিশ্চয়তা। এর মধ্যেও ঢাকা ও চট্টগ্রামে এখনো খোলা রয়েছে বেশ কয়েকটি গার্মেন্টস ও কলকারখানা। আর এসব কলকারখানা ও গার্মেন্টেসএ কর্মরত রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তত কয়েক লাখ শ্রমিক। ঢাকা-চট্টগ্রামের এসব কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের নিজ নিজ জেলায় ফেরত আনতে এবার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুরের কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন প্রিয়দর্শী চাকমা নামে বাংলাদেশে পুলিশে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক পদবীর এক কর্মকর্তা।

সাউথইস্ট জার্নালের পাঠকদের সুবিধার্থে প্রিয়দর্শী চাকমার খোলা চিঠিটি হুবুহু তুলে ধরা হলো:

মাননীয় পার্বত্য মন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি

মাননীয় মন্ত্রী
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়
বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকা বাংলাদেশ।

বিষয়ঃ ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশে বিভিন্ন এলাকায় অসহায়ভাবে আটকে পড়া পাহাড়ী গার্মেন্টস শ্রমিকদের পার্বত্য চট্টগ্রামে যার যার এলাকায় নিরাপদে ফিরে যাওয়ার আবেদন প্রসঙ্গে।

মহাত্মন,
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই-আমি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একজন সামান্য পুলিশ কর্মকর্তা হই।বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় কোরোনা পরিস্থিতিতে আমি প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা হিসাবে আমার অবস্থান থেকে কোরানা মোকাবেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি আমার সকল সহযোদ্ধাদের নিয়ে। বিগত ৩/৪দিন ধরে একটা বিষয় নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন আছি সেটা হলো পাহাড়ী শ্রমিকদের বাড়ী ফেরা নিয়ে। সরকারের কড়া নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও আইন শৃংখলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে লকডাউন অমান্য করে এই গ্রীষ্মে তপ্ত রোদ, কাল বৈশাখী ঝড়কে উপেক্ষা করে বিভিন্ন অলিগলি, চোরাই পথে প্রতিদিন হাজারো শ্রমিক পায়ে হেটে খাগাড়াছড়ি জেলায় প্রবেশ করছে বিপদে আছে রাঙ্গামাটি জেলার শ্রমিকরা চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি রোডটি টোটালে ব্লক হওয়ার কারণে কেউ আইন শৃংখলার দায়িত্বে নিয়োজিত বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না শ্রমিকদের পক্ষে তাদেরকে বেতবুনিয়া এবং লিচু বাগান থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় চট্টগ্রাম শহরের দিকে কেউ কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাতের আধারে চলে যাচ্ছে অনেকে নানা রকম বিপদের সন্মখীন হচ্ছে বেক করে দেওয়ার পরে চট্টগ্রাম শহরেও ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় অনেকে জঙ্গলাকীর্ণ পথে মোন পাহাড় ডিঙ্গিয়ে চলে যাচ্ছেন এহেন অবস্থায় প্রতিদিন বিপদের সন্মুখীন হচ্ছে নিরীহ পাহাড়ী শ্রমিকরা তারা না পারছে শহরে থাকতে না পারছে পাহাড়ে চলে যেতে না পাচ্ছে বেতন ভাতা। তাদের অনেক রুমমেট চলে যাওয়াতে মহিলা শ্রমিকারা একা একা থাকতে পারছে না তারা নিরাপত্ত্বাহীনতায় ভুগতেছেন অপরদিকে বাড়ীওয়ালার চাপ বাসাভাড়া গ্যাস বিদ্যুৎ পানির বিল পরিশোধের। সব মিলিয়ে যারা বর্তমানে শহরে অবস্থান করছেন কঠিন সময় পার করছেন পকেটে নেই টাকা দোকানদারেরা চাপ দিচ্ছেন বকেয়া পরিশোধের এখন দোকানীরাও বকেয়া দিচ্ছেন না এমতা অবস্থায় উপায়ান্তর না হইয়া তারা বাঁচা মরার লড়াইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন বাড়ী ফিরার জন্য। বেতন না পাওয়াতে তারা বাধ্য হচ্ছেন চলে যেতে থাকতে চাইলেও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না একার পক্ষে বাসাভাড়া পরিশোধ করা এবং নিরাপত্ত্বার বিষয়টিও জড়িত নারী শ্রমিকদের জন্য মালিকেরা অলরেডী বাসায় তালা ঝুলে দিচ্ছেন। কেউ বুঝার নেই অসহায় শ্রমিকদের দুঃখ দুর্দশার কথা অনেকে ফেসবুকে লম্বা লম্বা কথা বলে কিন্তু কেউ তাদের পাশে দাঁড়াই না।

হে মহামহিম মাননীয় পার্বত্য মন্ত্রী মহোদয় এই অসহায় মানুষরা সবাই আপনার গরীব প্রজা আপনিই পারেন একমাত্র তাদের মহা বিপদ থেকে রক্ষা করতে তাদের কোরোনা আক্রান্ত হয়ে মরতে হবে না তাদের এমনিতেই মরে যাবে না খেয়ে। মাননীয় মন্ত্রী আপনি তাদের পাশে দাঁড়ান তাদেরকে নিরাপদে বাড়ী ফেরার সুযোগ করে দিন অসহায় শ্রমিকদের পক্ষ হয়ে আপনার কাছে আমি সবিনয়ে প্রার্থনা করছি আপনি ইহার একটা বিহিত ব্যবস্থা করুন তাদের পার্বত্য এলাকায় ফিরে যেতে নিরাপদ ব্যবস্থা করে দিন।

বিনীত নিবেদক
প্রিয়দর্শী চাকমা (পুলিশ পরিদর্শক)
চট্টগ্রাম জেলা।
তাং-১৯/০৪/২০২০ ইং।

বিদ্রঃ আমার শুভাকাঙ্ক্ষী সকল ফেসবুক বন্ধুরা সকলে পোস্টটি বেশী বেশী শেয়ার করে দিন মাননীয় পার্বত্য মন্ত্রীর কাছে বার্তাটি পৌঁছে দিন ঘরে থাকুন কোরোনা থেকে নিরাপদ থাকুন।