বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে পানিবাহিত অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু
![]()
নিউজ ডেস্ক
বিশুদ্ধ পানির সংকটে ছড়া-খালের দূষিত পানি ব্যবহার করে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রোয়াছড়িতে অজ্ঞাত পানিবাহিত রোগে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে রোগটি কয়েকটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। ২০ এপ্রিল সোমবার পানি বাহিত এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের বেতছড়া এলাকার লংথাং পাড়া এবং সাংকিং পাড়াসহ আশপাশের কয়েকটি পাহাড়ী গ্রামে পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি এবং আমাশয় রোগের লক্ষণ জনিত পানি বাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। ইতিমধ্যে পাড়াগুলোতে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন সাংকিং পাড়ার বাসিন্দার বয়োজ্যেষ্ঠ নাংলং খুমি (৭০), অংথং পাড়ার বাসিন্দার খুবে অং (৮০) এবং লংথাং পাড়ার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ডালুং খুমি (১০)। এ রোগে পাহাড়ী পাড়াগুলোতে আক্রান্ত হয়েছে আরও অনেকে।
অজ্ঞাত রোগে মৃত্যুর খবরে উপজেলার কয়েকটি পাড়ার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। লংথাং পাড়ার কারবারী থেউলাং খুমি জানান, বেতছড়া ইউনিয়নে খুমি জনগোষ্ঠীর তিনটি পাড়ায় হঠাৎ করে পেট ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, আমাশয় রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে ৩ জন মারা গেছে। আক্রান্তদের দূরের একটি বাজার থেকে ওষুধ কিনে এনে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি স্বীকার করে রোয়াংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মংহ্লা প্রু মারমা বলেন, এরা মূলত দূষিত পানি খাওয়া এবং ব্যবহারের ফলে টাইফয়েড, ডায়রিয়া ও আমাশয়সহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বছরে এই সময় এসব রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় পাহাড়ে। ঐ এলাকায় বেতছড়া বাজারে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। আক্রান্তরা চাইলে সেখান থেকে ওষুধ নিতে পারে। সেখানে নিয়মিত চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছেন। আক্রান্ত এলাকায় দুজন স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা: অংসুই প্রু মারমা জানান, পানি বাহিত রোগে বেতছড়ায় কয়েক জনের মৃত্যুর খবর শুনেছি। রোগের প্রকোপ বেড়েছে পাড়াগুলোতে। স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে যাবার পর রোগের আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর বলা যাবে রোগটি কি। প্রাথমিকভাবে পানি বাহিত রোগ বলে মনে হচ্ছে।
এর আগে জেলার লামা উপজেলায় সরই ইউনিয়নে হামে আক্রান্ত হয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরে বেশ কয়েকজন শিশুকে গ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে লামা হাসপাতালে এনে চিকিৎসাও দেওয়া হয়।