সীমান্ত দিয়ে বছরে ২০ লাখ গরু পাচার হয় বাংলাদেশে, ঈদের সময় সর্বাধিক - Southeast Asia Journal

সীমান্ত দিয়ে বছরে ২০ লাখ গরু পাচার হয় বাংলাদেশে, ঈদের সময় সর্বাধিক

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দু’হাজার দুশ’ সতের কিলোমিটারের। এরমধ্যে পাঁচশ চুয়াত্তর কিলোমিটারই অরক্ষিত। কাঁটাতারের বেড়াও দেওয়া যায়নি এই পাঁচশ চুয়াত্তর কিলোমিটার এলাকায়। অরক্ষিত এই সীমান্ত দিয়েই দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গ থেকে নিয়মিত গরু পাচার হয় বাংলাদেশে। পাচার হয় পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং পশ্চিম-উত্তরপ্রদেশ থেকেও। একটা সময় ছিল যখন তদানীন্তন পূর্ব-পাকিস্তানে বিফের চাহিদা মেটাতো পশ্চিমবঙ্গ। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫২ বছর হলেও এখনও বিফের যোগান দেওয়ার মতো স্বনির্ভর হয়নি দেশটি।

আইনানুগ পদ্ধতিতে যে পরিমাণ বিফ রপ্তানি করে ভারত তা অপর্যাপ্ত। তাই, ভারতীয় গরু পাচার হয় চোরাপথে। বছরে প্রায় ২০ লাখ গরু যায় চোরাপথে। দুই ঈদে এ চাহিদা বাড়ে। চোরাচালান তখন তুঙ্গে ওঠে।

কীভাবে গরু পাচার হয় এই বঙ্গ থেকে?
মানবজমিনের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বহরমপুর শহর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে মহাহালদারপাড়ার ইমামবাজার। গ্রামটি পড়ে আছে প্রাগৈতিহাসিক যুগে। আলো নেই, টিমটিম করে হারিকেন জ্বলে। গ্রামে রাস্তা নেই, নেই প্রয়োজনীয় পয়ঃপ্রণালী, নেই হেলথ সেন্টার। অথচ এই গ্রামটিই হলো বাংলাদেশে গরু পাচারের প্রধান কেন্দ্র।

ট্রাকে ট্রাক গরু এই গ্রামে এসে জড়ো হয়। তারপর ভগীরথী, গঙ্গা কিংবা পদ্মা পার করতে পারলেই স্বর্গ রাজ্য। এক একটি গরু এই জল পার করাতে পারলে গরুপিছু মেলে আড়াই হাজার রুপি থেকে শুরু করে সাড়ে তিনহাজার রুপি। প্রতিটি গরু বাংলাদেশে বিক্রি হয় পঁচিশ হাজার থেকে পয়ত্রিশ হাজার টাকা দামে। সীমান্তরক্ষীদের ঘুষ দিতে লাগে ১৫ হাজার টাকা। তা সত্ত্বেও এক একটি ক্যাটল বেচে লাভ হয় সাত থেকে ১৫ হাজার টাকা। মোট ছয়টি ধাপ পেরিয়ে এই গরু পাচার হয়।

এই ছয়টি ধাপ হলো- সাপ্লাই চেইন অর্থাৎ গরুর মালিক, হোম স্টেট মার্কেট অর্থাৎ যেখান থেকে গরু সংগৃহীত হয়, লাউন্ডাররা যারা ট্রানজিটের সময় গরুর দেখভাল করে, ট্রান্সপোর্টার অর্থাৎ যারা গরুকে নদী পার করায়, সেলার এবং বাংলাদেশে অবস্থিত ক্যাটেল রানার- এদের কাছে গরু পৌঁছে গেলেই নিশ্চিন্ত। এরাই গরুর বিলিবন্টন, দাম আদায় করার ব্যাপারটি দেখাশোনা করেন।

এইভাবে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা চলছে। এই গরু পাচারকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডল এখন জেলে।

২০১৫ এর এপ্রিল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত খুব কড়াকড়ি ছিল। ওই সময় উদ্ধার হয় ২০ হাজার গরু। ব্যাস, তারপরই বজ্র আটুনি, ফস্কা গেরো! অবাধে চোরাচালান চলছে এবং পুষ্ট হচ্ছে।

You may have missed