মায়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তদন্তে আইসিসির কমিটি গঠন
![]()
নিউজ ডেস্কঃ
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে কথিত হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ১১ লাখেরও বেশি মানুষ। জাতিগত নিধনের ভয়াবহ বাস্তবতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশটি বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও জাতিসংঘের হিসাবে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ এখনও সেখানে থেকে গেছে। জাতিসংঘ এই সামরিক অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে আখ্যা দেয়ার পর এবার উক্ত গণহত্যার তদন্তে করতে যাচ্ছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
এর ফলে রোহিঙ্গা সংকটে পূর্ণ তদন্ত শুরু করতে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো সংস্থাটি। এই তদন্ত শুরু হলে এটাই হবে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রথম আন্তর্জাতিক তদন্ত।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের একাধিক প্রসিকিউটর বুধবার ২৬ জুন গনমাধমকে-কে এ তথ্য জানান।
মিয়ানমার সেই মুষ্টিমেয় দেশগুলোর একটি, যারা আইসিসি সনদে স্বাক্ষর করেনি। তাই সরাসরি মিয়ানমারের বিচারের এখতিয়ার আইসিসির নেই। এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে শুরু থেকেই তারা আইসিসির বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে। তবে আইসিসি মনে করছে, মিয়ানমার এই আদালতের সদস্য না হলেও বাংলাদেশ অন্যতম সদস্য দেশ। তাই এ ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার আদালতের রয়েছে। কারণ আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশের ধরনের জন্যই এই বিচার সম্ভব। তাই এক প্রসিকিউটরের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৬ সেপ্টেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে সংস্থাটির তিনজন বিচারক বিশিষ্ট প্রি-ট্রায়াল কোর্ট বিচারের পক্ষে রায় দেন। আদালত বলেছে, মিয়ানমার এই আদালতের সদস্য না হলেও বাংলাদেশ অন্যতম সদস্য দেশ। তাই এ ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার আদালতের রয়েছে। কারণ আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশের ধরনের জন্যই এই বিচার সম্ভব।
২০১৮ সালে একটি প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে আইসিসি। প্রসিকিউটর জানান, তিনি পূর্ণ তদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য আবেদন করবেন। আইসিসির সদস্য দেশ বাংলাদেশে তদন্তের ‘অন্তত একটি আলামত’ নিয়ে তদন্তের জন্য বিচারকদের কাছে অনুমতি চাইবেন। প্রসিকিউটর আরো বলেন, এই তদন্তের আওতায় যেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেই স্থান অর্থাৎ মিয়ানমারের রাখাইনও থাকবে। এর প্রেক্ষিতে আইসিসি জানায়, তারা ইতোমধ্যে তিনজনের বিচারক প্যানেল তৈরি করেছেন।
এই তদন্ত শুরু হলে আইসিসিই হবে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রথম আন্তর্জাতিক তদন্ত।