পাহাড়ের সব গণহত্যার বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি
![]()
নিউজ ডেস্ক
১৯৯৬ সালে রাঙামাটির লংগদুতে সংগঠিত ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যাকাণ্ডসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের সব গণহত্যার বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখা।
সোমবার পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে রাঙামাটি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনিস্টিউট মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বক্তারা এ দাবি জানান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙমাটি জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন– পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি সাব্বির আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন– রাঙামাটি সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোরশেদা আক্তার, রাঙামাটি পৌর সভাপতি মো. ইব্রাহিম, পৌর সাধারণ সম্পাদক হিরো তালুকদার, সদর উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মোমিনসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র শাখা লংগদুর পাকুয়াখালীতে নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াদের ওপর নির্মম নির্যাতনের পর হত্যাকাণ্ড চালায়। পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে এই দিনটি একটি নৃশংসতম বর্বর গণহত্যার দিন।
‘এই দিনে ৩৫ জন নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াকে নিমর্মভাবে হত্যা করেছিল শান্তি বাহিনী। তাদের ক্ষত-বিক্ষত, বিকৃত লাশের নিমর্ম দৃশ্য দেখে সেদিন শোকে ভারী হয়ে উঠেছিল পরিবেশ। হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে কুপিয়ে এবং বন্দুকের বেয়নেট ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নানাভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল সেদিন অসহায় ওই মানুষগুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শান্তিবাহিনী।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএসের সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীর হাতে অসংখ্য বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালিরা। অসংখ্য ঘটনার মধ্যে আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে একটি নৃশংসতম বর্বর গণহত্যা দিন পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস। এখন পর্যন্ত পাহাড়ের কোনও হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। নিহতদের পারিবারকে সরকারি নানা সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি সাব্বির আহমদ বলেন, ‘পাকুয়াখালী গণহত্যাসহ পাহাড়ে সব গণহত্যার তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন। না হলে পাবর্ত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা কোনোদিনই সফল হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সব অবৈধ অস্ত্রধারী আঞ্চলিক সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে গণহত্যার দায়ে খুনি সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাসহ তাদের সংগঠনের সব সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
আলোচনা সভা শেষে নিহত ব্যক্তিদের রুহের মাগফেরাত কামনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।