সেনা সহায়তায় দশ মাস পর নিজ গ্রামে ফিরল কেএনএফ আতঙ্কে পালিয়ে যাওয়া বম সম্প্রদায়

সেনা সহায়তায় দশ মাস পর নিজ গ্রামে ফিরল কেএনএফ আতঙ্কে পালিয়ে যাওয়া বম সম্প্রদায়

সেনাবাহিনীর সহায়তায় দীর্ঘ দশ মাস পর বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার সীমান্তবর্তী রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের বাকলাই বম পাড়ার ১০টি পরিবারের
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

সেনাবাহিনীর সহায়তায় দীর্ঘ দশ মাস পর বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার সীমান্তবর্তী রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের বাকলাই বম পাড়ার ১০টি পরিবারের ২৬ জন সদস্য নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। আজ বুধবার (২২ জানুয়ারী) দুপুরে রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বাকলাই বমপাড়ায় প্রবেশ করেন তারা।

এসময় পাড়াবাসীকে বাকলাই সেনাবাহিনীর সাব জোন ক্যাম্প কর্তৃক খাবার পরিবেশন করা হয়।

সেনাবাহিনীর সহায়তায় দীর্ঘ দশ মাস পর বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার সীমান্তবর্তী রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের বাকলাই বম পাড়ার ১০টি পরিবারের

বাকলাইপাড়াবাসী জানান, ২০২৪ সালে  এপ্রিল মাসে উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংক দুইটিতে সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যরা ভর দুপুরে ডাকাতি চালায় এবং পরবর্তীতে  বাকলাই পাড়া সেনা সাব জোন ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা সশস্ত্র কেএনএফ সন্ত্রাসীদের আটক করতে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় বাকলাই পাড়ার আশে পাশে কেএনএফ সদস্যদের সাথে সেনাবাহিনীর বন্দুকযুদ্ধে দুইজন কেএনএফ সন্ত্রাসী নিহত হয়। এরপর থেকে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা পাড়াবাসীর উপর নানা রকম নির্যাতন ও অত্যাচার শুরু করলে তারা গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন। ওই সময় নিরাপদে আশ্রয় নিতে মোট ৩৮ টি পরিবার বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হওয়ার কারণে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানের ১০টি বম পরিবারের ২৬ জন সদস্য আজ বাড়িতে ফিরেছেন।

সেনাবাহিনীর সহায়তায় দীর্ঘ দশ মাস পর বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার সীমান্তবর্তী রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের বাকলাই বম পাড়ার ১০টি পরিবারের

বাকলাইপাড়ার বাসিন্দা জোয়ার মনি বম (৬২) বলেন, ‘কেএনএফের নানা অত্যাচারের কারণে আমরা দীর্ঘ নয়-দশ মাস যাবৎ বন-জঙ্গলে, বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলাম। আজকে বাড়িতে ফিরতে পেরে খুব খুশি লাগছে।’

বাকলাইপাড়ার আরেক সদস্য জিলি বম (৩৭) বলেন, ‘প্রায় ১০ মাস বনজঙ্গলে পালিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাতে হয়েছে। অনেক দিন পর নিজ পাড়ার বসতভিটায় ফিরতে পেরেছি। এত আনন্দ বলার মতো না।’

সেনাবাহিনীর সহায়তায় দীর্ঘ দশ মাস পর বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার সীমান্তবর্তী রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের বাকলাই বম পাড়ার ১০টি পরিবারের

সেনাবাহিনীর সহায়তায় দীর্ঘ দশ মাস পর বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার সীমান্তবর্তী রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের বাকলাই বম পাড়ার ১০টি পরিবারের

বসতবাড়িতে ফিরে আসা লালমিনসাং বম বলেন, দীর্ঘ নয়-দশ মাস আগে তারা পাড়া ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় নিজ বাড়ি বাকলাই পাড়ায় ফিরতে পেরে খুব আনন্দবোধ করছেন তারা।

এবিষয়ে বাকলাই সেনা ক্যাম্প অধিনায়ক জানান, বাকলাই পাড়ার অবস্থান পাহাড়ি ও দুর্গম এরিয়ায়। তাই বিশ্বস্ত সোর্সের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি নিরীহ বম সম্প্রদায়কে নিজ গ্রামে ফিরিয়ে আনার জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করারও আশ্বাস দেন তিনি।

সেনাবাহিনীর সহায়তায় দীর্ঘ দশ মাস পর বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার সীমান্তবর্তী রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের বাকলাই বম পাড়ার ১০টি পরিবারের

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ২২ জুন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে তৎকালীন পরিষদ চেয়ারম্যান ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির আহ্বায়ক শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে ১৮ সদস্যের কমিটি গঠন করেন। একই বছরের ১৯ জুলাই, ৪ আগস্ট, ২১ সেপ্টেম্বর পৃথক স্থান থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির ১০ সদস্য ও কেএনএফের চার সদস্য ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশ নেন। ২০২৩ সালে ৫ নভেম্বর সরাসরি তাঁদের প্রথম বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে সমঝোতা স্মারকও সম্পন্ন হয়। এরপর ২০২৪ সালে ২রা এপ্রিল থানচি উপজেলা সদরে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের ডাকাতি পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকে। অভিযানের পর এই  প্রথম ১০ পরিবারের নারী, পুরুষ, শিশুসহ মোট ২৬ জন ফিরলেন নিজেদের বাড়ি বাকলাই পাড়ায়।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

You may have missed