সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কে স্বাগত জানাল পাকিস্তান

সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কে স্বাগত জানাল পাকিস্তান

সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কে স্বাগত জানাল পাকিস্তান
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের করা একটি মামলায় রায় দিয়েছেন দ্য পারমানেন্ট কোর্ট অব আরবিট্রেশন তথা স্থায়ী সালিশি আদালত (পিসিএ)। রায়ে আদালত বলেছেন, ভারতকে অভিন্ন নদীগুলোর পানি পাকিস্তানের ‘অবাধ ব্যবহারের’ জন্য প্রবাহিত রাখতে হবে। এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছে পাকিস্তান।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়। ওই ঘটনার জন্য নয়াদিল্লি কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইসলামাবাদকে দায়ী করে এবং একতরফাভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে। পাকিস্তান হামলার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সতর্ক করে জানায়, অভিন্ন নদীর পানি বন্ধ করার যেকোনো পদক্ষেপ যুদ্ধ ঘোষণার সমান।

এরপর ইসলামাবাদ তারা ১৯৬৯ সালের ভিয়েনা কনভেনশন অন ল অফ ট্রিটিজের লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করে স্থায়ী সালিশি আদালতে মামলার ঘোষণা দেয়। চলতি বছরের ২৭ জুন আদালত ‘সাপ্লিমেন্টাল অ্যাওয়ার্ড অব কমপিটেন্স’ জারি করে একটি রায় দেন, যেখানে বলা হয় যে, ভারত একতরফাভাবে চুক্তিটি স্থগিত রাখতে পারে না।

এরপর গত ৮ আগস্ট চূড়ান্ত রায় দেন আদালত। রায়ে বলা হয়েছে, ভারতের নির্মিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো চুক্তির নির্ধারিত শর্ত কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে; ভারতের নিজস্ব পদ্ধতির ভিত্তিতে নয়। চুক্তির শর্তের বাইরে গিয়ে কোনো বাঁধ বা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনও করা যাবে না।

পিসিএ’র এ রায়কে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘পিসিএর সিন্ধু পানিচুক্তি (আইডব্লিউটি) সংক্রান্ত সাধারণ ব্যাখ্যার বিষয়ে আদালতের রায়কে পাকিস্তান স্বাগত জানাচ্ছে।’

বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ভারত অবিলম্বে চুক্তির স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় চালু করবে এবং আদালতের রায় বাস্তবায়ন করবে। পাকিস্তান আরও বলেছে, ভারতের পরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ সিন্ধু নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করবে। যে প্রবাহের ওপর তাদের ৮০ শতাংশ সেচকাজ নির্ভরশীল।

ভারতের উজান থেকে পাকিস্তানের সিন্ধু অববাহিকায় প্রবাহিত নদীগুলোর পানি নিয়ে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। তবে সিন্ধু পানি চুক্তির মাধ্যমে সেই দ্বন্দ্বের নিরসন হয়। ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। ওই চুক্তি অনুসরণ করেই এসব নদীর পানি ব্যবহার করা হয়।

সিন্ধু অববাহিকার পূর্বাঞ্চলীয় তিনটি নদী ইরাবতী, বিপাশা ও শতদ্রুর পানি ব্যবহার করার অনুমতি দেয়া হয় ভারতকে। আর পাকিস্তানকে পশ্চিমাঞ্চলের তিনটি নদ-নদী সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাবের অধিকাংশ পানি ব্যবহার করতে দেয়া হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী কোনো দেশের পক্ষে এই চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত বা বাতিল করার সুযোগ বা বিধান নেই।

সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব নদীগুলোর প্রবাহ পাকিস্তানের কৃষি, শহর ও জ্বালানি ব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি। পাকিস্তানের জন্য এই পানির কোনো বিকল্প নেই। এই পানির ওপর ভিত্তি করেই পাকিস্তান তাদের সেচ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে যা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম সেচ ব্যবস্থা। কিন্তু ভারত পানির প্রবাহ বন্ধ করায় সেই সেচ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। হুমকিতে পড়েছে কৃষি।

তবে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের রায়ের পর ভারত পানির প্রবাহ চালু করবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। রায়ের ব্যাপারে দেশটি এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।