রোহিঙ্গা বোঝা টেনে নেয়ার অবস্থায় নেই বাংলাদেশ- পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
![]()
নিউজ ডেস্ক
নিজ দেশের সেনাবাহিনীর নির্যাতনে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা। বাংলাদেশ এ বোঝা আর টেনে নেয়ার অবস্থায় নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। গত ২২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থায়নের খোঁজে আয়োজিত ডোনার কনফারেন্সে এ কথা বলেন তিনি। বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, চার বছর আগে রোহিঙ্গারা যখন নিজ দেশের মানুষের হাতে নির্যাতন, গণহত্যার মুখে পালিয়ে আসছিল তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সীমান্ত খুলে দিয়ে তাদের জীবন রক্ষা করেছিলেন। মানবিক সহযোগিতা নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এগিয়ে আসার আগেই ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে খাদ্য, বাসস্থান, নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে প্রাথমিকভাবে সহযোগিতা করেছিল বাংলাদেশ। বিশাল জনসংখ্যা ও সীমিত সম্পদ নিয়ে যে কঠিন কাজটি বাংলাদেশ করেছে, তা অন্য কোনো দেশ ঐচ্ছিকভাবে নিজ কাঁধে তুলে নেবে না। কিন্তু বাংলাদেশ তখন থেকেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর যৌথভাবে ‘ডোনার কনফারেন্স ফর রোহিঙ্গা রিফিউজি’ শীর্ষক এ বৈঠক আয়োজন করে। ভার্চুয়াল এ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেনি মিয়ানমার। কনফারেন্সের শুরুতে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বাইগান। এরপর যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ এশিয়া এবং কমনওয়েলথ বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ, ইইউর সংকট ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিশনার জেনিজ লেনারকিক, ইউএনএইচসিআরের কমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি এবং জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক ও জরুরি ত্রাণ সমন্বয়ক মার্ক লৌকক প্রারম্ভিক বক্তব্য দেন। এরপর রোহিঙ্গা নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র দেখানো হয়। পরবর্তী সময়ে আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য রাখেন। আর দাতা সংস্থাগুলোর মধ্যে আইওএম, ইউনিসেফ, ডব্লিউএফপি, ইউএনডিপি, ব্র্যাক বাংলাদেশ, এপিআরআরএন এবং বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন।
এদিকে গতকাল (২১ অক্টোবর) দাতাদের বৈঠকে বসার আগে বাংলাদেশে থাকা ৮ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গার জন্য ৪ কোটি ৭৫ লাখ পাউন্ড সহযোগিতার ঘোষণা দেয় যুক্তরাজ্য। ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাইকমিশন থেকে জানানো হয়, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব এ অনুদানের ঘোষণা দেন। এ সময় রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন করায় দায়ীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিও জানানো হয়। এছাড়া রোহিঙ্গাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে না নিতে বিশ্বকে আহ্বান জানান যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।