আন্দামানে উদ্ধার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাধ্য নয় বাংলাদেশ - Southeast Asia Journal

আন্দামানে উদ্ধার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাধ্য নয় বাংলাদেশ

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

আন্দামান সাগর থেকে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ভাসতে থাকা নৌকা থেকে যে ৮১ রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীকে উদ্ধার করেছে; বাংলাদেশ তাদের ফেরত নিতে বাধ্য নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ব্রিটিশ বাতাংসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন তিনি। এর আগে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, আন্দামান সাগরে একটি মাছ ধরার নৌকা থেকে ওই রোহিঙ্গাদের জীবিত উদ্ধার করেছে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী। একই নৌকায় আরও ৮ জনের মরদেহ পাওয়া যায়। উদ্ধার এই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করছে ভারত।

ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, মানবিক সংকট বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের পর খাবার এবং পানি সরবরাহ করা হলেও ভারতে তাদের আশ্রয় দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই। এই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সরকার আলোচনা করছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ প্রত্যাশা করছে, নিকটতম দেশ ভারত অথবা রোহিঙ্গাদের দেশ বা উৎস মিয়ানমার তাদের গ্রহণ করবে।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বাংলাদেশের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী রয়টার্সকে বলেন, তারা বাংলেদেশি নাগরিক নন। মূলত তারা মিয়ানমারের নাগরিক। বাংলাদেশের সমুদ্র অঞ্চল থেকে এক হাজার ৭০০ কিলোমিটার দূরে তাদের পাওয়া গেছে। এমন অবস্থায় তাদের গ্রহণে আমাদের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি বলেছেন, ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে ১৪৭ এবং মিয়ানমার থেকে ৩২৪ কিলোমিটার দূরে রোহিঙ্গারা অবস্থান করছিলেন। রয়টার্সকে টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য দেশ এবং সংস্থাকে শরণার্থীদের যত্ন নেওয়া উচিত।

তবে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। শরণার্থীদের মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে ১৯৫১ সালে জাতিসংঘ একটি কনভেনশন গ্রহণ করে। নয়াদিল্লি এই কনভেনশনে স্বাক্ষর করেনি। শরণার্থীদের সুরক্ষায় ভারতের কোনও আইন নেই। তারপরও দেশটিতে বর্তমানে দুই লাখের বেশি শরণার্থী বসবাস করছেন; তাদের মধ্যে কিছু রোহিঙ্গাও রয়েছেন।

কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে বর্তমানে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছেন; যারা বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে বিভিন্ন সময়ের সংঘাত-সহিংসতা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন প্রদেশে মিয়ানমারের সামরিকবাহিনীর প্রাণঘাতী অভিযানের মুখে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসেন। পাচারকারীরা প্রায়ই উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গাদের অর্থের বিনিময়ে সাগরপথে মালয়েশিয়া অথবা ইন্দোনেশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করে। রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাটি সাগরে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর গত সপ্তাহে উদ্বেগ জানিয়েছিল জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।