হাসিনা-মোদি শীর্ষ বৈঠক: ৫ সমঝোতা সই, ৪ প্রকল্প উদ্বোধন
নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বাণিজ্যে অশুল্ক বাধা দূর, তথ্য-যোগাযোগে সহায়তা ও দুর্যোগ মোকাবিলাসহ ৫টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। গতকাল ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে এসব সমঝোতা হয়। পরে ঢাকা-জলপাইগুড়ি ট্রেন চলাচলসহ চারটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করে দুই প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ দমনে সহযোগিতা, ব্যবসা-বাণিজ্য বিকাশে অশুল্ক বাধা দূরের পদক্ষেপ, দুই দেশের জাতীয় ক্যাডেট কোরের মধ্যে সহযোগিতা বিনিময়, তথ্য যোগাযোগ ও রাজশাহীতে খেলার মাঠ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে সমঝোতা স্মারকগুলো সই হয়।
এ ছাড়া শিলাইদহের সংস্কারকৃত কুঠিবাড়ি, মেহেরপুরের মুজিবনগর থেকে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া হয়ে কলকাতা পর্যন্ত স্বাধীনতা সড়ক, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসমাধি, ভারতের উপহার ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স, চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল, দুটি সীমান্ত হাট উদ্বোধন এবং স্মারক ডাকটিকিটের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এর আগে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন দুই সরকার প্রধান। এতে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে কথা বলেন তারা। বিকেল ৫টার দিকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পৌঁছালে নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানান শেখ হাসিনা। এখান থেকে বঙ্গভবনে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন নরেন্দ্র মোদি। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যৌথভাবে ‘বঙ্গবন্ধু-বাপু জাদুঘর’ উদ্বোধন করেন। সেখানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজেও যোগ দেন।
সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যশোরেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে যান নরেন্দ্র মোদি। সেখান থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান ওড়াকান্দি মন্দির পরিদর্শন করে ঢাকায় ফেরেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতির সাথে বৈঠক শেষে তিনি নয়া দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবসে শুক্রবার সকালে এয়ার ইনডিয়ার একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে নরেন্দ্র মোদীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। ২০২০ সালের মার্চে মুজিববর্ষের আয়োজনে মোদির উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে তা পিছিয়ে গিয়েছিল। মহামারী শুরুর পর গত এক বছরের মধ্যে সেই বাংলাদেশেই তিনি প্রথম সফরে এলেন।