খাগড়াছড়িতে বাঙ্গালীদের উপর সন্ত্রাসী হামলা, সম্প্রীতি বৈঠক অনুষ্ঠিত

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙায় রোববার (৪ এপ্রিল) দুপুরে বাঙালি কৃষকদের উপর হামলার ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে পুরো এলাকাজুড়ে। সীমান্তবর্তী মাটিরাঙা উপজেলার তবলছড়ির লাইফু কার্বারীপাড়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৩ বাঙালি কৃষক আহত হয়েছেন।

জানা গেছে, স্থানীয় বাঙালিরা লাইফু কার্বারীপাড়া ও আশপাশ এলাকায় নিজেদের জমিতে চাষাবাদ করে আসছেন। রোববার লাইফু কার্বারীপাড়া এলাকায় কচু চাষের জন্য কাজ করতে গেলে ইউপিডিএফের ৩০-৩৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাদের বাধা দেন। বাধা উপেক্ষা করে জমিতে কাজ করতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের মারধর করে ৬০-৭০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এতে প্রায় ১৩জন বাঙ্গালী শ্রমিক আহত হন। আহতরা সবাই তবলছড়ি ও তান্দিং ইউনিয়নের ইসলামপুর ও শুকনাছড়ি এলাকার বাসিন্দা। এদের মধ্যে দুজন পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাঙালি কৃষকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মাটিরাঙার যামিনীপাড়া জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, মাটিরাঙা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, মাটিরাঙা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আলী, মাটিরাঙা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম হুমায়ুন মোরশেদ খান, তবলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাদের ও তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীর।

অন্যদিকে, এ ঘটনায় স্থানীয় পাহাড়ী ও বাঙ্গালীদের মধ্যে এক প্রকার অবিশ্বাস তৈরী হয়েছে। সৃষ্ট এ ঘটনায় পাহাড়ী-বাঙ্গালী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে স্থানীয় পাহাড়ী ও বাঙ্গালীদের নিয়ে আজ মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) তবলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদে এক সম্প্রীতি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, ডিজিএফআই ডেট কমান্ডার কর্ণেল মোঃ খুরশীদ আলম, যামিনী পাড়া জোন (২৩ বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ মিজানুর রহমান, জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজমহ উপজেলার স্থানীয় জনপ্রিতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা সকলকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়ে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া রিজিয়ন কমান্ডার সবাইকে প্রচলিত আইন মেনে চলার আহবান জানান। তারা বলেন, কোন অবস্থাতেই সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের ছাড় দেয়া হবেনা।

আলোচনা সভায়, পাহাড়ি-বাঙালি সবাই সম্প্রতির বন্ধন বজায় রেখে একসাথে বসবাস এবং প্রশাসন ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে যেকোন পরিস্থিতিতে প্রশাসনকে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে তথ্য দেওয়ার আহবান জানানো হয়। এছাড়া ভবিষ্যতে এই রকম ঘটনা যাতে না ঘটে সবাইকে সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকার জন্য আহবান জানানো হয়।