বুধবার পশ্চিমবাংলায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় যশ
![]()
নিউজ ডেস্ক
শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় যশ। শনিবার সকালে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। আগামীকালের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এরপর উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগোবে। সোমবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এর পরের ২৪ ঘণ্টায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এরপর ফের উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে যশ। বুধবার সকালে ওড়িশা, পশ্চিমবাংলা ও বাংলাদেশের উপকূলে পৌঁছবে এই ঘূর্ণিঝড়।
আগামী সোমবার নিম্নচাপ উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আরো তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। আগামী বুধবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবাংলায় আছড়ে পড়তে পারে। ভারতের আলীপুর আবহাওয়া দপ্তর শনিবার জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় যশ কোথায় আছড়ে পড়বে, এখনো অস্পষ্ট। তবে পশ্চিমবাংলাতেই আঘাত করার আশঙ্কা বেশি।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানানো হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। বুধবার সন্ধ্যায় আছড়ে পড়তে পারে যশ। তবে গত বছরের ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের থেকে যশের দাপট কম হওয়ার সম্ভাবনা। ৪০-৪৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। মঙ্গলবার হাওয়ার বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৭০ কিমি। ২৫ মে থেকে উপকূলবর্তী জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হবে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে পরবর্তী সময়ে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। ২৬ মে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ২৭ মে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তাল হতে পারে সমুদ্র।
গভীর নিম্নচাপ থেকে আগামী ২৫ তারিখের দিকে তা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুছ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বর্তমানে পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ২৫ মে রাতে বা ২৬ মের মধ্যে সেটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে আঘাত করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় যশ বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বেশি আঘাত হানতে পারে। এখনো নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না ঘূর্ণিঝড়টি কোন কোন এলাকায় আঘাত হানতে পারে। তবে সুন্দরবনের দক্ষিণ পাশ দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। আবার দিক পরিবর্তনও হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টির নাম রাখা হয়েছে ‘যশ’। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা থেকে ঝড়ের আগাম এই নাম দেয়া হয়। ঝড়টির নাম ঠিক করেছেন ওমানের আবহাওয়াবিদেরা। ওমানের ভাষায় যশ মানে হচ্ছে হতাশা।
শনিবার সকাল থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং যশোর, কুষ্টিয়া ও সিলেট অঞ্চলসহ রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে অস্থায়ীভাবে মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আগামী তিনদিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে। পাশাপাশি তাপমাত্রা কমতে পারে।
এছাড়া রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, ফেনী ও পাবনা জেলাসহ ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে খুলনায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৪ ঘণ্টায় সৈয়দপুরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ৮৮ মিলিমিটার।