বাংলাদেশি ১৮ জেলেকে ‘ধরে নিয়ে গেছে’ মিয়ানমারের বিজিপি
নিউজ ডেস্ক
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা শেষে ফেরার পথে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের কাছ থেকে ৪টি নৌকাসহ ১৮ বাংলাদেশি মাঝিমাল্লাকে ‘ধরে নিয়ে গেছে’ মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)।
এ বিষয়ে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ‘গত মঙ্গলবার বিকেলে বিজিপির সদস্যরা জেলেদের ধরে নিয়ে গেছে। গতকাল বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত তাদের ফেরত দেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধরে নিয়ে যাওয়া’ জেলেরা হলেন টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়া পাড়ার মো. জসীম (২৫) একই এলাকার সাইফুল ইসলাম (২৩), মো. ফায়সেল (২৩), আবু তাহের (২২), মো. ইসমাইল (২০), মো. ইসহাক (২৪), আব্দুর রহমান (২৪), নুর কালাম (২৬), মো. হোসেন (২২), হাসমত (২৫), মো. আকবর (২৩), নজীম উল্লাহ (১৯), রফিক (২০), সাব্বির (২৫), মো. হেলাল (২৫), রেজাউল করিম (১৮), রমজান (১৬) ও জামাল (২১)।
আবদুস সালাম আরও জানান, সাগরে মাছ ধরে ফেরার পথে এসব জেলেরা ডুবে যাওয়া একটি কাঠবোঝাই ট্রলারের উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। এতে তারা কিছু কাঠও উদ্ধার করে। পরে ফেরার পথে ৪টি নৌকাসহ ১৮ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা। বিষয়টি জানার পর উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবিকে) বিষয়টি জানানো হয়েছে।
শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার সকালে প্রতিদিনের মতো টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা মো. জসিম, নুর কালাম, মো. ইসলাম ও নুর কালামের মালিকাধীন ৪টি নৌকায় ১৮ জন মাঝিমাল্লা সাগরে মাছ শিকারে যান। মাছ ধরা শেষে ফেরার পথে মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে শাহপরীর দ্বীপের কাছাকাছি নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় কাঠবোঝাই একটি ট্রলার দেখতে পায়। এ সময় জেলেরা ডুবে যাওয়া ট্রলারের উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। পরে তারা তীরে ফিরে আসার সময় মিয়ানমার বিজিপির সদস্যরা একটি স্পিডবোটে এসে বাংলাদেশি মাঝিমাল্লাদের ধাওয়া করে এবং এক পর্যায়ে অস্ত্রের মুখে ‘ধরে’ নিয়ে যায়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, ‘নৌকাসহ ১৮ জন বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্থানীয় এলাকাবাসীর মাধ্যমে জেনেছি। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় বিজিবিকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিজিবি কাজ করছে।’
টেকনাফের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির ব্যাটালিয়-২-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, ‘আপনারা যেভাবে শুনেছেন আমরা ও সেভাবে শুনেছি। মাঝিমাল্লাদের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদেরকে বিষয়টি জানানো হয়নি। তারপরে ও আমরা খোঁজখবর নিয়ে মিয়ানমারে সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশকে চিঠি পাঠিয়েছি। তবে এখনো তাদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।’