অশান্ত পাহাড়ে শান্তি ফেরাবে সীমান্ত সড়ক

নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য অঞ্চলের অশান্ত পাহাড়কে এবার শান্ত করবে একটি সড়ক। নাম তার ‘সীমান্ত সড়ক’। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তিনটি পর্যায়ে নির্মাণাধীন সড়কটির প্রথম পর্যায়ে প্রায় ২০০ কিলোমিটার সড়ক এরইমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। সম্প্রতি সময় সংবাদের সরেজমিন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া–শুরু থেকেই বলা হচ্ছিল, বাংলাদেশের নতুন এ জঙ্গি সংগঠনটি পার্বত্য এলাকায় আস্তানা গেড়েছে। শুধু তা-ই নয়, বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে চুক্তিবদ্ধ হয় তারা।
যৌথ অভিযানে হিন্দালের সদস্যরা অনেকটা কোণঠাসা হলেও পাহাড়ে এখনও সক্রিয় কেএনএফ বা কুকিচিন ন্যাশনাল আর্মি। সম্প্রতি কেএনএফের আইইডি বা পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণ ও গুলিতে নিহত হন দুই সেনা সদস্য। হিন্দাল বা কেএনএফ ছাড়াও নামে-বেনামে আরও অনেক সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় পাহাড়ে। যে কারণে মাঝে মাঝেই রক্তাক্ত হয় সবুজ পাহাড়।
লোকালয়ে এসে অপরাধ করে গহিন পাহাড়ে অনায়াসেই সটকে পড়ছে দুষ্কৃতকারীরা। যোগাযোগব্যবস্থার দুর্বল দশার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও অপারেশন চালাতে বেগ পেতে হয়। তবে সেই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাবে একটি সড়ক। এমন আশা এ সড়ক তৈরির দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সীমান্ত সড়ক প্রকল্পের কর্মকর্তা কর্নেল ভূঁঞা মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়ার।
তিনি বলেন, ‘সড়কটি হলে এ অঞ্চলে বিজিবি, সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যাতায়াত বেড়ে যাবে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হবে বলে আমি মনে করি।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড ১ হাজার ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সীমান্ত সড়কটি নির্মাণ করছে তিনটি পর্যায়ে। যার প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালে। প্রথম পর্যায়ে ৩১৭ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১৭৩ কিলোমিটার সড়ক এরইমধ্যে যান চলাচলের উপযোগী। বাকি ৭১৯ কিলোমিটার সড়ক তৈরি হবে আগামী ১০ বছরের মধ্যে।
বাংলাদেশ-ভারত এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার লাগোয়া সীমান্ত ধরে রামগড় থেকে টেকনাফ পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে সড়কটি। সমতলের চেয়ে পাহাড়ি এলাকায় আত্মগোপন করা সহজ। তাই শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বেই অপরাধীদের পছন্দের জায়গা পাহাড়ি অঞ্চলগুলো। সীমান্তের এ সড়কটি ধীরে ধীরে উন্মুক্ত করছে পাহাড়ি সব আড়াল-অন্তরাল। ফলে এ পথ সীমান্ত অপরাধ দমনের পাশাপাশি এ অঞ্চলের অপরাধ কমাতেও সাহায্য করবে।