পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে শহীদ সেনা অফিসারের পরিবারের কাছে ঘর হস্তান্তর
নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত শহীদ সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. হাবিবুর রহমানের পরিবারকে একটি ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সেনাপ্রধানের নির্দেশনায় তার পরিবারের কাছে ঘর হস্তান্তর করা হয়।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ জুন) সেনাপ্রধানের পক্ষে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ৭ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার বরিশাল এরিয়া মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা ঘর হস্তান্তর করেন। চারতলা ভিত্তির ওপর নির্মিত ঘরের একতলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রামে বান্দরবান রিজিয়নের রুমা জোনে কর্মরত থাকাকালে গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি জেএসএসপন্থি একটি চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী দলের আক্রমণে নিহত হন। ওই সন্ত্রাসী দলের আগমনের তথ্য পেয়ে তার নেতৃত্বে একটি নিরাপত্তা টহল দল বথিপাড়া এলাকায় যান। সেখানে পৌঁছালে নিকটস্থ একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত টহল দলের ওপর গুলি বর্ষণ শুরু করে। হাবিবুরের সাহসী নেতৃত্বে টহল দল সন্ত্রাসীদের পাল্টা জবাব দিলে জেএসএস মূল দলের তিন সশস্ত্র সন্ত্রাসী বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় পলায়নপর সন্ত্রাসীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন। অভিযানে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ১টি এসএমজি, ২৪৯ রাউন্ড গুলি, ৩টি অ্যামোনিশন ম্যাগাজিন, ৩টি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের ৫ রাউন্ড গুলি, ৪ জোড়া ইউনিফর্ম ও চাঁদাবাজির নগদ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা জব্দ করা হয়।
হাবিবুর রহমান ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগদান করেন। সেনাবাহিনীতে যোগদানের পর সুদীর্ঘ ৩০ বছর চাকরি জীবনে তিনি মেধা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট/সংস্থায় তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করেন। সেনাবাহিনী কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব পালনে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. হাবিবুর রহমান দেশপ্রেম ও কর্তব্যনিষ্ঠার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমানের মহান আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে প্রদত্ত এই ঘর তার স্ত্রী ও দুই পুত্র সন্তানের সুন্দর নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করণে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।