খাগড়াছড়ির রামগড়ে অবৈধভাবে বাঙালীদের ভূমি দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন - Southeast Asia Journal

খাগড়াছড়ির রামগড়ে অবৈধভাবে বাঙালীদের ভূমি দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড়ে ইউপিডিএফ (প্রসীত) সন্ত্রাসীদের মদদে অবৈধভাবে বাঙালীদের ভূমিতে বসতি নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

বুধবার (২১ জুন) সকালে বাটনাশিবির ভূমি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে রামগড় বাজারের হাইপ্লাজা প্রাঙ্গনে এ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

এসময় স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ গুচ্ছগ্রামবাসীরা তাদের ভূমি বে-দখল হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে উক্ত ভূমি উদ্ধারে সরকার ও প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

রামগড় পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জনাব আবুল বশর বলেন, বাটনাশিবির এলাকায় বাঙ্গালীরা ৬০/৭০ বছর ধরে বসবাস এবং করে আসছে। কিন্তু হঠাৎ কিছু বহিরাগত উপজাতি পরিবার বাঙ্গালীদের ভূমিগুলো বেদখল করে অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করছে, তিনি এই সমস্যা নিরসনে দ্রুত প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লা বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব বাগ-বাগিচা সজ্জিত ভূমিতে আমরা যেতে পারছি না, বহিরাগত উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাদের ভূমিতে অবৈধভাবে জোর করে বসতি স্থাপন করেছে। ভূমির নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করেও আমাদের নামে রেকর্ডভুক্ত ভূমি বহিরাগত উপজাতীয় ভূমিদস্যুরা আমাদের বাগ-বাগিচা করতে দিচ্ছে না। সরকার ও প্রসাশনের কাছে আমাদের ভূমি উদ্ধার এবং ভূমির নিরাপত্তা চাই।’

সংগঠনের সভাপতি মোঃ ইউনুছ বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদার বসত-ভিটা বাটনাশিবির এলাকা হতে সরকার ১৯৮৬ সালে উপজাতীয় সশস্ত্র শান্তিবাহিনীর আক্রমণ হতে রক্ষার্থে তৎকালীন বিডিআর ক্যাম্প সংলগ্ন তৈচালাপাড়ায় গুচ্ছগ্রামে নিয়ে আসে, সরকার ও প্রসাশনের পক্ষ থেকে তখন আমাদেরকে বলা হয়েছিলো পাহাড়ে কখনো শান্ত পরিস্থিতি বিরাজমান হলে আবার আমাদের বসত-ভিটায় পুনর্বাসন করা হবে। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার ও জনসংহতি সমিতির শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পার হয়ে গেলেও আমাদের বসত-ভিটার পুনর্বাসন করা হয়নি। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বহিরাগত উপজাতীয় ভূমিদস্যুগণ অভ্যাহতভাবে আমাদের ভূমি বে-দখল এবং জোরপূর্বক অবৈধ বসতি স্থাপন করে চলছে।’

তিনি আরো বলেন, ১৯৮৬ হতে ২০২৩ পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৮ বছর গুচ্ছগ্রাম রেশন কার্ডের আতপ চাউল এবং গম খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি, যা বর্তমান সভ্য আধুনিক যুগেও আমদের মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। পরিবারে সদস্য বৃদ্ধি হলেও বৃদ্ধি হয়নি চাল ও গমের পরিমান। এসময় মানববন্ধন থেকে বাটনাশিবির এলাকার গুচ্ছগ্রামবাসীদের পক্ষে সরকার ও প্রসাশনের নিকট ছয় দফা দাবি উস্থাপন করা হয়।

দাবীগুলো হলো,

১। বাটনাশিবির এলাকার গুচ্ছগ্রামবাসীদের সকল বে-দখলকৃত ভূমি উদ্ধার করতে হবে।

২. বার্টনাশিবির এলাকার সকল গুচ্ছগ্রামবাসীকে পূনর্বাসনের ব্যাবস্থা করতে হবে।

৩. বাটনাশিবির এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. বাদপড়া গুচ্ছগ্রামাবাসীদের তালিকা তৈরি করে রেশন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. গুচ্ছগ্রামবাসীদের স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে এবং সরকারি, বেসরকারি চাকুরীতে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

৬. বাটনাশিবির এলাকার গুচ্ছগ্রামবাসীদের জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

এসময় বাটনাশিবির এলাকার ভূমি রক্ষা কমিটির নেতাকর্মীসহ ভূমি হারা ও অধিকার বঞ্চিত সর্বোস্তরের লোকজন মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিত অংশ নেন।

 

ভিডিও চিত্র:

https://youtu.be/XakjjDTcSaE