জুলাইয়ের শেষে রোহিঙ্গা শিবিরে আসছেন মিয়ানমারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল- রাষ্ট্রদূত
![]()
নিউজ ডেস্কঃ
রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কি কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা ব্যাখ্যা করতে মিয়ানমারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল শিগগিরই বাংলাদেশে আসবেন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হাউ ডু সুয়ান। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক বৈঠকে সোমবার এসব কথা বলেছেন ক্রিস্টিন শ্রানার-বার্গেনার এবং হাউ ডু সুয়ান। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি ও এএফপি। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, শিগগিরই, হতে পারে জুলাইয়ের শেষের দিকে, কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে তার সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠাবে। ওই প্রতিনিধিরা বাস্তুচ্যুত লোকজনের কাছে ব্যাখ্যা করবেন তাদের ফিরে যাওয়া ও পুনর্বাসনের জন্য কি কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এদিকে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে যদি কোনো পদক্ষেপ নেয়া না হয় তাহলে ‘এলার্ম বেল’ বাজাবেন মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের দূত ক্রিস্টিন শ্রানার-বার্গেনার। সোমবার তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়ার অগ্রগতি ধীরগতিতে এগুচ্ছে। এক্ষেত্রে যদি কোনো পদক্ষেপ নেয়া না হয় তাহলে এটা হবে এলার্ম বেল বাজানোর সময়।
তিনি আরো বলেন, মাঠপর্যায়ে বড় ধরণের কোনো পরিবর্তন নেই। এক্ষেত্রে তিনি অনেক চ্যালেঞ্জের বিষয়ে ইঙ্গিত করেন। এর মধ্যে রয়েছে, সেখানকার বেসামরিক নেতাদের চরম প্রতিকূল পরিবেশ অতিক্রমের বিষয়। এমন পরিবেশে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রভাব অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমারের সেনবাহিনী। তা ছাড়া মিয়ানমারের ভিতরে রয়েছে অসংখ্য জটিলতা। এসব জটিলতা অন্তরায় হয়ে আছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে রোহিঙ্গা সঙ্কট। তিনি মিয়ানমারের বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা ৭০ বছরের কথা উল্লেখ করেন। বলেন, সেখানে সক্রিয় রয়েছে ২১টি সশস্ত্র গ্রুপ। রয়েছে উন্নয়নের অভাব। সেখানে মাদক উৎপাদন হয়। সেখান থেকে মানব পাচার হয়।
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি পলিটিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ইলেন ফ্রেঞ্চ। তিনি বলেছেন, রাখাইনের অবস্থা উন্নয়নে খুব সামান্যই অগ্রগতি হয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির অব্যাহত লড়াই দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে বেসামরিক জনগণের হতাহত হওয়ার ঘটনা। তিনি আরো জানান, রোহিঙ্গাদের এখনও ফিরে যাওয়ার মতো উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয় নি বলে মনে করে জাতিসংঘ, এর সঙ্গে একমত যুক্তরাষ্ট্র। রাখাইনে সরকার ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে রেখেছে। এতে সংশয় হয় তাদের পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি নিয়ে। যে পরিবেশে রোহিঙ্গারা নিরাপদে বসবাস করবেন।
ওই বৈঠকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বলেন, রাখাইনে ফিরে যেতে আবেদন করেছে ৩০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা। এর মধ্যে প্রায় ১৩ হাজার ২০০ জনকে সাবেক অধিবাসী হিসেবে যাচাই করা হয়েছে। তারা যেকোনো সময় রাখাইনে ফিরতে পারবে।