সীমান্ত হত্যার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী - Southeast Asia Journal

সীমান্ত হত্যার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

গত এক বছরে সীমান্তে হত্যার ঘটনা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে লিখিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকেল ৫টায় অধিবেশন শুরু হয়।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে বিরাজমান সুসম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশেষ করে গত এক বছরে সীমান্ত হত্যার ঘটনা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এরপরও সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক নিহতের ঘটনা ঘটলে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে লিখিত প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়। পাশাপাশি পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে জোরালো প্রতিবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ক্রাইম ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস) সফটওয়্যারের মাধ্যমে মানব পাচারকারীদের তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে বলেও জানান আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, মানব পাচারের মতো গুরুতর ও সংঘবদ্ধ অপরাধ প্রতিরোধ ও দমনে বর্তমান সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। দেশের অভ্যন্তরে ও দেশের বাইরে মানব পাচার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অপরাধ কার্যকরভাবে প্রতিরোধের জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম. আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানব পাচার সংশ্লিষ্ট অপরাধ বিশেষত নারী ও শিশুদের প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি সমঝোতা স্মারক রয়েছে। মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২ তে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, সীমান্ত এলাকায় ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে কঠোর নজরদারি, ভিকটিমদের দ্রুত উদ্ধার, সুরক্ষা ও পুনর্বাসন সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। এর ফলে দেশে বর্তমানে মানব পাচার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অপরাধ কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম. আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো চলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তার এ ঘোষণা বাস্তবায়নে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সব আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ২০২২ সালে সারাদেশে অভিযান চালিয়ে এক লাখ ৯৩ হাজার ৩৩১ কেজি আইস ও ১৬৭টি এলএসডি জব্দ করেছে। এই সময়ে এক লাখ ৩২১টি মামলা দায়ের এবং এক লাখ ২৪ হাজার ৭৭৫ জন অবৈধ মাদক কারবারীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ওই সময়ে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৯ পিস ইয়াবা, এক লাখ ১৫ হাজার ৩৬৮ কেজি গাঁজা, ৭ লাখ ৬ হাজার ৬১ বোতল ফেনসিডিল, ৩৩৮ কেজি হেরোইনসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে।

একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে নাফ নদী হয়ে দেশে এমফিটামিন (ইয়ারা) ও ক্রিস্টাল মেথ (আইস) অনুপ্রবেশ করে। ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ (আইস) প্রতিরোধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অধীন টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার সমন্বয়ে ‘টেকনাফ বিশেষ জোন’ স্থাপন করা হয়েছে। সীমান্তে আইসসহ অন্য মাদকদ্রব্যের চোরাচালান প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এনফোর্সমেন্ট কমিটির সভা ও পরিবীক্ষণ সভাতেও এ সংক্রান্তে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তিনি জানান, ক্রিস্টাল মেথ (আইস) প্রতিরোধে বিজিবি ও কোস্টগার্ড ও সব সংস্থার সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪০ ধারায় মাদকদ্রব্য অপরাধের নেপথ্যে জড়িত অর্থ জোগানদাতা, পৃষ্ঠপোষক, মদদদাতাদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।