সীমান্ত হত্যা নিরসনের প্রস্তাব বিজিবির, কমানোর আশ্বাস বিএসএফের

নিউজ ডেস্ক
রিজিয়ন কমান্ডার ও ফ্রন্টিয়ার আইজি পর্যায়ের সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা নিরসনের প্রস্তাব দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ- বিজিবি। এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে নিরসন নয়, হত্যা কমানোর আশ্বাস দিয়েছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী- বিএসএফ। আর এ সিদ্ধান্তেই স্বাক্ষর করেছে বিজিবি-বিএসএফ।
যশোরে অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফ রিজিয়ন কমান্ডার ও ফ্রন্টিয়ার আইজি পর্যায়ে ৪ দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় যৌথ বিবৃতির মধ্য দিয়ে এ সম্মেলনের সমাপ্তি টানা হয়েছে। সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা কমিয়ে আনাসহ ৬টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বিজিবির রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে বিজিবির যশোর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদসহ উভয় রিজিয়নের অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট সেক্টর কমান্ডার, বিজিবির স্টাফ অফিসার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর এবং যৌথ নদী কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি শ্রী আয়ুষ মানি তিওয়ারির নেতৃত্বে ৩৭ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে। ভারতীয় প্রতিনিধি দলে বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল ও গৌহাটি ফ্রন্টিয়ারের আইজি ছাড়াও সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের নোডাল অফিসার, ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া সীমান্ত সম্মেলনে উভয় দেশের কর্মকর্তারা সীমান্ত হত্যা কমিয়ে আনা, পেশাদারিত্বের সঙ্গে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন, ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে রাত্রিকালীন যৌথটহল বৃদ্ধি, সীমান্তবর্তী এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, জনসচেতনতা ও জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ, অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদান, মাদকপাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মানবপাচার, স্বর্ণপাচার রোধ, আগামী দিনে যৌথ খেলাধুলা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বিনিময়সহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, উভয়পক্ষ পূর্বানুমতি ছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করা ও সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বন্ধ থাকা উন্নয়নমূলক কাজসমূহ জয়েন্ট ভেরিভিকেশনের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হন।
সম্মেলন শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সম্মেলন শেষ হয়েছে। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা ও আহতের ঘটনা জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়। এ প্রসঙ্গে বিজিবি বিএসএফকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ‘সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায়’ আনতে সম্মত হয়েছে।
অপরদিকে, বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি শ্রী আয়ুষ মানি তিওয়ারি বলেন, চারদিনের সম্মেলনে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন তারা। দুই দেশের মধ্যে এবং দুই বাহিনীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে বিএসএফ বদ্ধপরিকর।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মঙ্গলবার বিকেলেই ভারতীয় প্রতিনিধি দল তাদের দেশে প্রত্যাবর্তন করবে।