নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ - Southeast Asia Journal

নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সামগ্রী কেনার বড় উৎস চীন। ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ এর আওতায় প্রতিরক্ষা সামগ্রী কেনার যে উৎসগুলো রয়েছে, তা বহুমুখীকরণের জন্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় নেদারল্যান্ডসের সঙ্গেও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ। সে জন্য আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ২৩ থেকে ২৪ নভেম্বর দেশটির রাজধানী হেগ সফর করেন। তিনি দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও প্রতিরক্ষা সামগ্রী প্রস্তুতকারী ডামেন কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশ দূতাবাসের একাধিক এক্স (টুইট) বার্তায় তার সফর সম্পর্কে জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) নেদারল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি কমান্ডার মেজর জেনারেল লুডি স্মিডটের সঙ্গে সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন ওয়াকার-উজ-জামান।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) ডামেন শিপইয়ার্ড প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের সময়ে প্রযুক্তি হস্তান্তর করে অফশোর পেট্রোল ভেসেল বা ফ্রিগ্রেট স্থানীয়ভাবে তৈরি করতে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। এতে উভয়পক্ষের জন্য লাভজনক সহযোগিতা কী হতে পারে, তা নিয়েও কথা হয়।

এর আগে গত জুলাই মাসে নেদারল্যান্ডসে রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ এক এক্স (সাবেক টুইট) বার্তায় জানান, তিনি দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাজা ওলোনগ্রেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

ইইউ দেশ থেকে ক্রয়
আন্তর্জাতিক সংস্থা স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপরি) তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য (৯১ মিলিয়ন ডলার), ইতালি (৮৩ মিলিয়ন ডলার), ফ্রান্স (৪২ মিলিয়ন ডলার), জার্মানি (৩৮ মিলিয়ন ডলার), স্পেন (২৫ মিলিয়ন ডলার) এবং অস্ট্রিয়া (১ মিলিয়ন) থেকে প্রতিরক্ষা সামগ্রী কিনেছে।

ইইউভুক্ত নয়, এমন দুটি দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে একই সময়ে যথাক্রমে ৪৫৪ মিলিয়ন ডলার এবং ৬৯ মিলিয়ন ডলারের পণ্য কিনেছে বাংলাদেশ।

সিপরি’র তথ্য বলছে, বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি প্রতিরক্ষা সামগ্রী কেনে চীন থেকে। গত ১৫ বছরে ওই দেশ থেকে ২৭০ কোটি ডলারের বেশি প্রতিরক্ষা সামগ্রী কেনা হয়েছে।

বাংলাদেশের অবস্থান
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক সই করার আগ্রহ রয়েছে বাংলাদেশের। ইতোমধ্যে ফ্রান্সের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক হয়েছে।

গত জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর ইতালি সফরের সময়ে একই ধরনের একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। ওই সফরের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছিলেন, ‘এসব কেনাবেচা যদি বড় মাপে করতে হয়, তখন একটি চুক্তি থাকলে সেফগার্ড করা যায়। সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। ইতালির কাছ থেকে ইতোমধ্যে আমরা ছোট ছোট অনেক কিছু নিয়েছি। তারা ইউরোপের মধ্যে অন্যতম দেশ— যারা সাবমেরিন, অ্যাটাক হেলিকপ্টারসহ অনেক কিছু তৈরি করে। ভবিষ্যতে এ (কেনার) সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে।’

জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতিরক্ষা সামগ্রী কেনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য অন্যতম বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে প্রযুক্তি হস্তান্তর। যে দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে বোঝাপোড়া ভালো হবে, সে দেশের সঙ্গে সহযোগিতা তত বেশি ভালো হবে।’

নৌ বাহিনীর জন্য অফশোর পেট্রোল বোট বা ফ্রিগেট বিষয়ে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা চলছে।’

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৫ নভেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বৈঠকে পাচঁটি যুদ্ধজাহাজ কেনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’